পাতা:ঔপনিষদ ব্রহ্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
ঔপনিষদ ব্রহ্ম

সংসার ত আছেই—কাল্পনিক সৃষ্টির দ্বারা সেই সংসারেরই আয়তন বিস্তার করিয়া লাভ কি? আমরা অসৎ সংসারে আছি বলিয়াই আমাদের সত্যের প্রয়োজন, আমরা সংসারী বলিয়াই সেই সংসারাতীত নির্ব্বিকার অক্ষর পুরুষের আদর্শ উজ্জ্বল করিয়া রাখিতে হইবে—সে আদর্শ বিকৃত হইতে দিলেই তাহা সছিদ্র তরণীর ন্যায় আমাদিগকে বিনাশ হইতে উত্তীর্ণ হইতে দেয় না। যদি সত্যকে, জ্যোতিকে, অমৃতকে আমরা অসৎ, অন্ধকার এবং মৃত্যুর পরিমাপে খর্ব্ব করিয়া আনি, তবে কাহাকে ডাকিয়া কহিব

 অসতো মা সদগময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়, মৃত্যো র্মামৃতং গময়?

সংসারী জীবের পক্ষে একটি মাত্র প্রার্থনা আছে—সে প্রার্থনা অসৎ হইতে আমাকে সত্যে লইয়া যাও অন্ধকার হইতে আমাকে জ্যোতিতে লইয়া যাও, মৃত্যু হইতে আমাকে অমৃতে লইয়া যাও। সত্যকে মিথ্যা করিয়া লইয়া তাহার নিকট সত্যের জন্য ব্যাকুলতা প্রকাশ চলে না, জ্যোতিকে স্বেচ্ছাকৃত কল্পনার দ্বারা অন্ধকারে আচ্ছন্ন করিয়া তাহার নিকট আলোকের জন্য প্রার্থনা বিড়ম্বনা মাত্র, অমৃতকে স্বহস্তে মৃত্যুধর্ম্মের দ্বারা বিকৃত করিয়া তাহার নিকট অমৃতের প্রত্যাশা মূঢ়তা। ঈশাবাস্যমিদং সর্ব্বং যৎকিঞ্চ জগত্যাং জগৎ—যে ব্রহ্ম সমস্ত জগতের সমস্ত পদার্থকে