পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা দীপশিখা কোথাও অন্ধকার দেখিতে পায় না-যে ঘরে যায়। সেই ঘর হইতেই অন্ধকার সরিয়া যায়, যে ঘরে যতক্ষণ থাকে। সেই ঘরই ততক্ষণ আলোকময় হইয়া থাকে-তাহার অভাবে ঘর যে অন্ধকার হয় তাহাও বােধ হয় বুঝিতে পারে না! দীপশিখা অচেতন। নবেঢ়ি চেতন হইলেও কতকটা যেন এই অচেতন দীপশিখার মত । তাহারাও পিতৃগৃহ হইতে গিয়া স্বামিগুহ আলো করিয়া থাকে। তাঙ্গাদের অভাবে তাহদের পিতা মাতার গৃহে ও মনে যে অন্ধকারের আবির্ভাব হয় সেটা কি তাহারা বুঝিতে পারে ? সূৰ্য্যনারায়ণের গৃহ অন্ধকার হউক, কমলা আসিয়া নীলকমলের গৃহ আলো করিয়াছে। তাহার আগমনে সকলেই আনন্দিত—দাস, দাসী ও প্রতিবাসী সকলেই যেন ক'ত সুখী । নীলকমল বিষয়-কৰ্ম্ম দেখিবার ভার কৰ্ম্মচারীদের উপরে দিয়া নিজে অধিকাংশ সময় অন্তঃপুরেই অতিবাহিত করেন। সন্ধ্যার পর উপরের দালানেই তাহার বৈঠক হয়। আলবোলার নলটি মুখে দিয়া, পুত্রবধূকে নিকটে বসাইয়া তিনি গল্প: করিতে বসেন। কমলা প্রথমে প্রথমে তাঙ্গাকে দেখিয়া ঘোমটা টানিত-কথা কহিতে চাহিত না ; তিনি সে সব কিছুই করিতে দেন না । নববধূর আদরষত্নে কাহারও কোন প্রকার ত্রুটি নাই। কিন্তু অচিরপিঞ্জরাবদ্ধ বনবিহঙ্গ যেমন স্বর্ণপিঞ্জরে বসিয়াও জন্মবিটপীর চিরপরিচিত তৃণনীড়ের কথা মনে করিয়া উড়ু উডু করে, কমলার মনটাও তেমনি এই সকল আদরযত্নের মধ্যেও জনকের সেই জীৰ্ণ গৃহখানির কথা ভাবিয়া চঞ্চল হইয়া উঠিতে লাগিল। এমাস নয়। ওমাস করিয়া শেষে ছয় মাসের পর কমলা একবার পিতৃগৃহে যাইতে পাইল ; কিন্তু ছয় মাসের পর গিয়া ছয় দিনও থাকিতে পাইল না । পঞ্চম দিবসেই নীলকমল তাহাকে ܬܘܶ