পাতা:গিরিশ-গ্রন্থাবলী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ബപ=ഞ്ച്ചബം ধারণা যে, সওয়া লাখ বিপক্ষের সম্মুখীন সে একা হইতে পারে,- সেই নিমিত্ত আপনাকে একা বলে না, পণ্টন বলিয়া পরিচয় দেয় । হায় গুরুগোবিন্দ ! যবন জয় করিতে হইবে, তাহাই তোমার সঙ্কল্প ছিল, জানিতে না—যবন অপেক্ষা শতগুণে বলবান কোন জাতি ভারত-রাজ্য-পিপাসায় অর্ণব-তরী বাহনে ভারতে উপস্থিত হইবে ; তাহা হইলে তুমি কালাপানি যাওয়া নিষেধ করিতে না। তোমার খালসা সৈন্য কাহারও অধীন হইত না । পঞ্চককার সাধক, শিখই ভারতের অধীশ্বর হুইত, কিন্তু ‘গতস্য শোচনা নাস্তি ? স্বাৰ্থত্যাগী মহাপুরুষ-প্রভাবে তুর্দান্ত প্রতাপ প্রথম নেপোলিয়ান পরাজিত হন। মাতৃভূমির প্রয়োজনে, প্রত্যেক ব্যক্তি তাহার কর্তব্য সাধন করিবে। ট্রাফেলগার-জয়ী নেলসনের ইহা জপমন্ত্র ছিল, এই মন্ত্রবলে ভারতবর্ষ ইংলণ্ডের করতলগত, নচেৎ ফরাশী ভারত-ঈশ্বর হইতেন । আমাদের বিরুদ্ধে কেহ কথা তুলিতে পারেন বটে, কিন্তু এ সকল ত কাটাকাটি মারামারি বর্ণনা, রাজনৈতিক বিষয় হইতে স্বতন্ত্র ; যদিও নয় – তথাপি তর্কের নিমিত্ত, আমরা স্বীকার করিয়া লইতেছি যে, গুরুগোবিন্দ সিংহের শিথ জাতি স্থাপন করা রাজনৈতিক প্রভাবে হয় নাই । রাজনীতি-বিশারদ মন্ত্রীর প্রভাবে ট্রাফেলগার জয় হয় নাই, স্বার্থত্যাগী মন্ত্রী, যাহারা কখনও অস্ত্রম্পর্শ করে নাই, তাহাদের ত্যাগবলে কি অঘটন ঘটিয়াছে, তাহাই বলিব । ইংলণ্ডের ইতিহাস অনেকেই অবগত। সেই ইতিহাসের পত্রেই দেখিবেন, সে সংসার-সুখ-বিরক্ত রাজমন্ত্রী “পিট সাহেব” যিনি কৰ্জ করিয়া সংসারযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করিয়াছিলেন, রাজমন্ত্রী হইয়াও জীবন-ব্যয়োপষোগী উপায় করিতে পারেন নাই, সুকৌশলে ইউরোপীয় রাজগণকে নপোলিয়ানের আধিপত্য-লালসা বুঝাইয়া দিয়া এক স্কল্পে আবদ্ধ পূর্বক কিরূপে দুৰ্দ্দম শক্র জয় করিয়াছিলেন। iাহার কৌশলের সাফল্য তিনি জীবনে দেখেন নাই, না দখুন ; কিন্তু তাহারই স্বাৰ্থত্যাগী মন্ত্রণাবলে মহাবীর মপোলিয়ান সেন্টহেলনায় আবদ্ধ হইয়াছিলেন। পিট হেব কাৰ্য্যপ্রিয় ছিলেন । কাৰ্য্যই তাহার সর্বস্ব, স্বার্থ য় ; তাহার প্রমাণ, তাহার মৃত্যু। সুকৌশলে সমস্ত @y સ્વાન ২৯৭ রাজবৃন্দকে এক প্রয়োজনে আবদ্ধ করিয়া কার্যসিদ্ধি হইবে পিট, সাহেব ইহা ভাবিয়াছিলেন, কিন্তু আমাহুষিক বুদ্ধি ও উদ্যম-বলে নেপোলিয়ান অষ্টাৰ্লিজ যুদ্ধ জয় করায় পিট সাহেব বিষাদপূর্ণ হন। অষ্টালিজ মূক-ভাব তিনি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, এই বলিয়া ইতিহাসে র্তাহার বর্ণনা । “জিনা যুদ্ধ’ পরাজয় শুনিয়া তিনি প্রাণবায়ু ত্যাগ করেন। ইহাতে প্রমাণিত হয়, স্বদেশহিত র্তাহার হৃদয়ের একমাত্র আকাজক্ষা ছিল । তাহার কৌশল স্বার্থের উপর স্থাপিত নয়, স্বার্থশূন্য। রাজমন্ত্রী স্বদেশের অমঙ্গল-আশঙ্কায় প্রাণ ত্যাগ করিলেন । যদি তাহার মন্ত্রণ ছলনাপূর্ণ হইত, যে অর্থে পলিসি আমরা গ্রহণ করি, তাহা হইলে তাহার পালেমেণ্টে প্রতিদ্বন্দ্বী বার্ক, ফক্স প্রভৃতি মহানুভব রাজনীতি দীক্ষিত পুরুষেরা বক্তৃতা-বলে ইংলণ্ডকে “পিটের” স্বার্থপরত বুঝাইয়া দিয়া তাহাকে মন্ত্রী পদচ্যুত করিতে পারিতেন । আমেরিকা যখন স্বাধীনতার জন্য ইংরাজ বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, রাজা তৃতীয় জর্জ যদি স্বাধীনচেতা, স্বদেশ-কার্য্যে প্রাণদাতা মন্ত্রীবর “চ্যাথেম” এর নিঃস্বাৰ্থ বাক্য উপেক্ষা না করিয়া আমেরিকা-পীড়নে সৈন্য প্রেরণ না করিতেন,- বোধ হয় ট্রান্সভাল যুদ্ধে কেনেডিয়৷ ও অষ্ট্রেলিয়ার ন্যায় আমেরিকা, যোদ্ধ-সন্তান প্রেরণ করিত স্বার্থশূন্ত রাজমন্ত্রীর বাক্য উপেক্ষাই, আমেরিকা হস্তচুতির কারণ। স্বার্থশূন্ত রাজনৈতিক মন্ত্রণাফলে বাঙ্গালা আজ সুন্দরবন নহে । রাজপ্রতিনিধি কর্ণওয়ালিস যদি কালেক্টারীর কর আদায়কারীদিগকে স্থানীয় স্থায়ী wfootá (Permanent Settlement) Al foot, afotos এতদিন বন হইত। কালেক্টরের,-যাহারা এখন জমীদার, কর আদায় করিয়াই মাস্ত হইতেন, স্থানীয় শুভাশুভের প্রতি দৃষ্টি রাখিবার কি প্রয়োজন ছিল ; কিন্তু স্থানীয় আধিপত্য প্রাপ্তে কালেক্টার অর্থাৎ জমীদার রাজস্ব দিয়া, প্রজার শ্ৰীবৃদ্ধি সাধনাকাজী হইলেন, তাই বাঙ্গালা জঙ্গল না হইয়া, পরগণায় বিভক্ত ও প্রতি পরগণায় নগর সংস্থাপিত । যদিচ এ প্রবন্ধ-বহির্ভূত কথা,— যাহা বলিতেছি, অপর প্রবন্ধে সমালোচ্য,—যখন বিষয়টা উপস্থিত, তখন একটী কথা বলি—যদি সকল জমীদার তাহাদের মহলে তাহারা ‘রাজা’ এই কথা উপলব্ধি করিতেন ; প্রজা সুখী হইলে র্তাহাদের উত্তরাধিকারী সুখী হইবে, যেরূপ অধ্যবসায়