পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
শুক্র
১১১

 শুক্রগ্রহের অনেক কথা বলিলাম। তাহাতে মানুষ বা অপর কোনো জীবজন্তু বাস করে কি না, এখন সেই কথা বলিব। শুক্রের একদিকে চিরকালের জন্য দিন এবং আর একদিকে চিরকালের জন্য ঘোর রাত্রি আছে, একথা তোমাদিগকে আগেই বলিয়াছি। সুতরাং ইহার অন্ধকার দিক্‌টা যে বরফের চেয়ে ঠাণ্ডা এবং আলোর দিক্‌টা যে, মরুভূমির মত গরম, একথা তোমরা বোধ হয় অনায়াসে বুঝিতে পারিতেছ। এইজন্যই জ্যোতিষীরা আন্দাজ করেন, শুক্রে যদি জল থাকে, তবে তাহার সকলই বরফ হইয়া অন্ধকারের দিকে জমা হইয়া আছে। আলোর দিক্‌টা গরম, কাজেই সেখানে জলের লেশমাত্র থাকিতে পারে না।

 আমাদের পৃথিবীতে যেমন গরম দেশের বাতাস আকাশের উপর দিয়া ঠাণ্ডা দেশে যায় এবং ঠাণ্ডা দেশের বাতাস গরম দেশে আসে, শুক্রেও ঠিক্ তাহাই হয়। ঠাণ্ডা ও গরম বাতাস তাহার দুই পিঠে চিরদিন ছুটাছুটি করিতে থাকে। চিরকাল ধরিয়া যেন শুক্রের উপর দিয়া প্রকাণ্ড ঝড় বহিয়া যায়।

 খুব গরম মরুভূমির মধ্যে মানুষ বাঁচিয়া থাকে এবং মেরু-প্রদেশের বরফের উপরেও মানুষ ও জীবজন্তুরা বাস করে। তা-ছাড়া খুব প্রবল ঝড়ের মধ্যেও তাহারা নিজেদের রক্ষা করিয়া চলে। কাজেই শুক্রের গরমে, ঠাণ্ডায় এবং জড়ে যে জীবজন্তু বাস করিতে পারে না, একথা কখনই বলা যায় না। জল ও বাতাসই জীবের প্রাণ, সেগুলি যখন শুক্রগ্রহে আছে তখন সেখানে জীবজন্তু থাকারই সম্ভাবনা বেশি নয় কি?

 কিন্তু তাই বলিয়া তোমরা মনে করিও না যে, শুক্রে ঠিক্ তোমার আমার মত মানুষ বা আমাদের গোয়াল ঘরের গরুর মত গরু আছে। পৃথিবীর সহিত শুক্রের কত অমিল রহিয়াছে তাহা আগে বলিয়াছি। কাজেই বিধাতা যদি শুক্র গ্রহে জীব সৃষ্টি করিয়া থাকেন, তবে তাহাদিগকে তিনি