পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় প্রস্তাব । ు 8ని যেন আরও উন্মাদিত করিয়া যাইতেছে। এরূপ দৃষ্টিশূন্ত অন্ধের যে কিছু অনুষ্ঠান, তাহ বস্তুতঃ প্রলয়-প্রতিরূপ । আমাদিগের আধুনিক জাতীয় জীবনের বহুলাংশে এই দশা,-সেই প্রলয়-প্রতিরূপে অভিনয় হইয়া থাকে। এখানে ধৰ্ম্ম, কৰ্ম্ম, সাহিত্য, সভ্যতা, যে কিছু বিষয়, সমস্তই বাহভাবাপন্ন ও কৃত্রিমতায় পরিপূর্ণ ; আভ্যন্তরীণ ও সাত্ত্বিক এ পর্য্যন্ত কিছু হয় নাই ; সকলই বাহ শোভা বা বাহ অলঙ্কারস্থলীয় সঙ্কং জোতির্বিভাসিত আত্মভূ ও আগু পদার্থ নহে । ধৰ্ম্মই কৰ্ম্মমূল বটে, কিন্তু তা বলিয়া সকল ধৰ্ম্মও এক নহে, সকল কৰ্ম্ম ৪ এক নহে । নানা প্রকৃতিবিশিষ্ট অন্তর্জগৎ, নানারূপবিশিষ্ট বহির্জগৎ ; যখন যে প্রকৃতি যেরূপ রূপের সহ সম্মিলিত হয়, তখন প্রসারিত দৃষ্টিও তদভিগামিনী হইয়া থাকে। অনুরূপ দৃষ্টি হইতে অনুরূপ ধর্শ্বের উৎপত্তি ; এবং অনুরূপ ধৰ্ম্ম হইতে অনুরূপ কৰ্ম্মের উৎপত্তি হয় । সুতরাং দেশ কাল ও পাত্র অনুসারে, ধৰ্ম্ম এবং কৰ্ম্মে নানা পার্থক্য আসিয়া জুটে এবং মুলকারণের উচ্চেতর ভাব অনুসারে পৰ্ম্ম ও কৰ্ম্মে উত্তম-অধম ভেদে নানা পৰ্য্যায় ও শ্রেণীভেদ হয়। যে দৃষ্টি ইহলৌকিক বিষয়ে প্রসারিত, তত্ত্বৎপন্ন ধৰ্ম্মকে লৌকিক ধৰ্ম্ম বলে ; যাহা পারলৌকিক বিষয়ে প্রসারিত, তাহাকে পারলৌকিক ধৰ্ম্ম বলে । এই উভয়বিধ ধৰ্ম্মই লোকমনে তিষ্টিয়া থাকে ; কিন্তু তখনই তাহার পূর্ণ সৌন্দর্য্যের কারণ হয়, এবং তখনই তাহাকে পূর্ণধৰ্ম্ম বলা যায়, যখন উভয়ে যথাসম্ভব সামঞ্জস্ত সম্মিলিত হইয়া চিত্তমধ্যে অবস্থান করিয়া থাকে। কিন্তু তাহ এ পর্য্যন্ত কখনও সম্পূর্ণ ভাবে পৃথিবীতে । ঘটয় উঠে নাই, এবং পৃথিবীও তাহার জন্য আজি পৰ্য্যন্ত প্রস্তুত হয় নাই। পৃথিবীতে এখনও একতর প্রাধান্তযুক্ত ধর্মের প্রাধান্ত, হয় লৌকিক নয় পারলৌকিক। প্রাচীন যুগের ভারতীয় ধৰ্ম্ম