পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ প্রস্তাৰ । ২৩৯ কৰ্ম্ম, ধৰ্ম্মের পরিদৃপ্তমান মূৰ্ত্তি-প্রচারণামাত্র। অদৃষ্ট-সংসারে যে অনুজ্ঞা ঘোষিত হইতেছে, কৰ্ম্ম দৃষ্ট-সংসারে তাহার পালন ফলস্বরূপ। ধৰ্ম্ম সেই অনুজ্ঞা এবং পালন-ফলের মধ্যস্থানাধিকারী ; সুতরাং মনুষ্যের ইহলোক ও পরলোকের মধ্যে যে সম্বন্ধ, তাহ একমাত্র ধৰ্ম্মই সংযোজিত করিয়া রাখিয়াছে ও রাখিতেছে ; এবং উহারই সহযোগে মনুষ্য, ইহলোক হইতে পরলোক এবং পরলোক হইতে ইহলোক, এতদুভয়ের মধ্যে আত্মিকভাবে গতায়াত করিয়া থাকে এবং উহাই তৎপক্ষে একমাত্র সোপান স্বরূপ হয়। সেই ধৰ্ম্ম এবং কৰ্ম্ম,—তদুভয়ের সৎ-অসংবোধ লইয়াই প্রধানতঃ মানবীয় তত্ত্ববিদ্যার কাৰ্য্য। সুতরাং সেই দুই বিষয় বিভাগে তত্ত্ববিদ্যাকেও দুই অংশে বিভক্ত করা যাইতে পারে। ধৰ্ম্মের বিষয় যে তত্ত্ববিদ্যার বিষয়ীভূত, লোকে তাহাকে আত্মজ্ঞান বা মনস্তত্ত্ব বা জ্ঞানতত্ত্ব, এবং কৰ্ম্মের বিসয় যে তত্ত্ববিদ্যার বিষয়ীভূত, তাহাকে কৰ্ম্ম বা সমাজিক তত্ত্ব বলিয়। থাকে। এক্ষণে আমরা যেরূপ নাম ও বিষয় বিভাগে আলোচনা করিব, নিম্নে তাহা বলিতেছি । পূৰ্ব্বেই বলা গিয়াছে যে, তত্ত্ববিদ্যার অবনম্বনীয় শাস্ত্র প্রথমতঃ তর্কদর্শন, দ্বিতীয়তঃ তত্ত্ববিজ্ঞান। প্রথমটির কার্য্য, কালে লুপ্তপ্রায় হইয়াছে যে বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধার অবলম্বনীয় পদার্থ, তাহার প্রতিকুল চিত্র দেখাইয়া অশান্তি-সমূদ্রে নিক্ষেপণ ; দ্বিতীয়টির কার্য্য, সেই বিশ্বাস্ত বিষয়ে মলনিমুক্ত নূতনত্ব উদঘাটন পূৰ্ব্বক, শান্তিকরীরূপে মনুষ্য-হৃদয়ের সহ তাহার দৃঢ় সংযোজন । একের ফলে, মানব দারুণ অশাস্তিতরঙ্গে পতিত হইয় প্রকৃত কার্যকরণে অস্থির বা দুষিতহস্ত হইয় থাকে ; অপরের ফলে, মনুষ্য স্বচ্ছন্দ সৌরকর-বিহসিত কুলভাগে প্রতিষ্ঠাপিত হইয়া সানলামনে কাৰ্য্যামৃষ্ঠানে প্রবৃত্ত হয়।