পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রীক ও হিন্দু। . وك ) چ হয় । এখানেও, প্লেটোর অন্তশ্চক্র ও বহিশচক্র জন্য যে যে ক্রিয়া ও তত্ব, তাহদের উক্ত বিষয়গুলির সহিত যথেষ্টই সাদৃশ্য দেখা যাইতেছে। ফলতঃ প্রকৃতিজ পদার্থ বোধরূপ বিজ্ঞান সহ, অন্তশ্চক্রজাত স্থল জ্ঞান এবং পদার্থনিহিত পরমাত্মসত্তাংশরূপ জ্ঞানসহ, প্লেটোর আইডিয়ার অবিকল সাদৃশু দেখিলে আনন্দিত হইতে হয়। তত্ত্বামুসরণে হিন্দুর মুখ্য উদ্দেশ্য যেমন জ্ঞান, প্লেটোরও সেইরূপ আইডিয়া । এক্ষণে এই পরিদৃশ্যমান বিশ্বব্ৰহ্মাওরূপ আধিভৌতিক স্বষ্টির উদয় হইল কিরূপে, তৎসম্বন্ধে প্লেটো বলিতেছেন,—এই বিশ্ব দ্বৈত উপায় সংযোগে স্বল্প । একটি নিত্যভাব ও অপরটির নাম ?—‘জনন ভাব’ নামেই বলা যাউক । নিত্য ভাব,—অব্যয়, অক্ষয়, অপরিবর্তনীয়রূপে নিত্য অবস্থা। জননভাব—হইতেছে কিন্তু হয় না । বাঞ্ছারাম, বুঝিলে কিছু?—গাজির কুড়ল নড়ে চড়ে, খসে না ! তামাসা নহে, ইউরো পীয় তাত্ত্বিকের জননভাব অর্থে প্রায় সেইরূপই বুঝিয়া থাকেন। জননভাব,—পদার্থটি জন্মিতেছে বটে, অথচ বস্তুতঃ কিন্তু পদার্থটি নাই। অন্য কথায়, ইহা গ্ৰীক পোষাকে ঢাকা বেদান্তের মায়াতত্ব মাত্র। এমন মায়াবাদের তুল্য স্বহ্মাণুক্ষ গাঢ় ও গৃঢ় তত্বব্যাখ্যান, বোধ করি, পৃথিবীতে আর কিছুই উৎপন্ন হয় নাই ; কিন্তু ইউরোপীয়বুদ্ধি জড়বিজ্ঞান-বিষয়ণী, সুতরাং উহা তাহাদিগের নিকট গাজির কুড়ল স্বরূপ হওয়ায় আশ্চর্য্যের বিষয় কিছুই মাই। সাধারণ ইউরোপীয় বুদ্ধির নিকট, নিত্যভাব,–বিচারশক্তিসম্পন্ন বুদ্ধির বিষয়, এবং জননভাব,— ইন্দ্ৰিয়-ক্রিয়োৎপন্ন সহজ জ্ঞানের বিষয়। ইউরোপীয়ের এই ভাবদ্বয়ের কতদূর মর্শগ্ৰহ করিয়া থাকেন, তাহ পরেও প্রদর্শিত হইতেছে। নিত্য ভাবই সত্য পদার্থ ; জননভাব তদ্বিপরীতে পরিবর্তনশীল, হ্রাস বৃদ্ধি ও ক্ষয়ের অধীন, অনিত্য ও অবস্তু—অর্থাৎ বস্তু বোধ