পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম প্রস্তাব । ●: কিন্তু এ স্থলে একটি কথা বলা কৰ্ত্তব্য । পুনরুক্তি বা অনাবশুক হইলেও, বলিতে ক্ষতি নাই। উপরে জাতীয় প্রকৃতির নিৰ্ম্মণবিষয়ে নৈসর্গিক দৃষ্ঠাবলি ও তদীয় আকর্ষণাদির যেরূপ আলোচনা করা গেল, তদ্বারা যেন এরূপ কোন মতে বিবেচিত না হয় যে, একমাত্র নিসর্গপ্রাণ বহিজগৎ, মানবজীবনের গতিচাতুৰ্য্যসম্পাদন এবং তাহার ভাবী পরিণামভিত্তিস্থাপন পক্ষে বলবতী ; অথবা, মানব-প্রকৃতি আত্মস্বাতন্ত্র্য পরিত্যাগপূর্বক কেবল এক বাহ্যজগতে লীন হইয়াছে। মানবের অন্তঃপ্রকৃতি যাহা, তাহা সৰ্ব্বদাই বাহাজগৎ হইতে মানবের স্বাতন্ত্র্যভাব পরিজ্ঞাপন করিতেছে । বাহাজগৎ আমাদিগের সম্বন্ধে কেবল কৰ্ম্মক্ষেত্ৰ নিৰ্ব্বাচন এবং কৰ্ম্মভিত্তি নিরূপণ ও কৰ্ম্মার্থে উপকরণাদি সম্প্রদান করিয়া থাকে ; আমরা নিজ অন্তঃপ্রকৃতি যোগে সেই কৰ্ম্মক্ষেত্র মধ্যে সেই কৰ্ম্মভিত্তিকে আশ্রয় করিয়া, সেই উপকরণরাশির সদ্ব্যবহারে ও স্বেচ্ছাশক্তির পরিচালনে, কৰ্ম্মরাশির সমুৎপাদন করিয়া থাকি । সুতরাং এখন প্রতীত হইবে যে, আমাদের অন্তঃপ্রকৃতি যাহা, তাহা সৰ্ব্বদা স্বাতন্ত্র্যভাবযুক্ত এবং কেবল আমাদের বহিঃপ্রকৃতি যাহা, তাঁহাই বাহ্যজগতে লীন হইয়া থাকে। এ স্থলে আরও একটি বিষয় পরিষ্কার করিয়া বলা কৰ্ত্তব্য । আমরা এই প্রস্তাবমধ্যে কোথাও প্রকৃতি, কোথাও বাহাজগৎ, কোথাও বা মনুষ্যপ্রকৃতি, এরূপ একধরণের বহু শব্দ ব্যবহার করিয়া আসিতেছি ; কিন্তু প্রত্যেক শব্দ ঠিক কি কি অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে ? দার্শনিকের ন্যায় কোন বিশেষ শব্দকে বিশেষ অর্থদানে সেই শব্দের অর্থসঙ্কীর্ণতা সাধন করা, আমাদিগের কখনই রুচিকর নহে ; বরং সৰ্ব্বাস্তঃকরণে সেরূপ কাৰ্য্যকে ঘৃণা করিয়া থাকি। তথাপি দেখিতেছি, এই প্রস্তাবমধ্যে, প্রকৃতি সম্বন্ধী নিকটার্থবোধক বিবিধ শব্দের একত্র সংযোজনহেতু