পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\)88 গ্রীক ও হিন্দু। প্রমাণপদার্থাদি লইয়া মনঃপুত ফল আকর্ষণ করিয়া থাকে। আমি প্রত্যক্ষ দেখিয়াছি, অনেক কৰ্ম্মপশু আপন কৰ্ম্মভয়ে নাস্তিকতা অবলম্বন করিয়াছে। ইহার কায়িক, বাচিক, মানসিক বা সৰ্ব্বপ্রকার আপন কৰ্ম্মভয়ে, শাস্তির আশায় আগে এধৰ্ম্ম ওধৰ্ম্ম সেধৰ্ম্ম করিয়া এবং সকল ধৰ্ম্মেরই শাসন অল্প ইতরবিশেষে কঠোরতায় প্রায় সমান দেখিয়া, অবশেষে না-ধর্মের আশ্রয় গ্রহণপূর্বক মনকে প্রবোধ দিবার চেষ্টা করিয়া থাকে। বিপাকে নাস্তিকের ভাব সেরূপ নহে । ইহারা ঈশ্বরকে পাইবার জন্য অশেযবিধ চেষ্টা করিয়া, শেষে চেষ্টাচালনায় ভ্রান্তগতি হওয়াতে অভীষ্ট বস্তুকে দেখিতে না পাইয়া, অগত্যা নাস্তিকতার ভাব অবলম্বন করিয়া থাকে। ইহাদের উপর এখনও আশা করা যাইতে পারে, এবং এখনও ইহাদিগকে প্রকৃত ঈশ্বরের দাস বলিয়া গণনা করা যায়। ইহারা যে নাস্তিক হয়, তাহা পরিতাপের সহিত হইয়া থাকে। আরও এক শ্রেণীর নাস্তিক আছে, তাহ প্রধানতঃ কেবল আমাদের দেশেই দেখিতে পাওয়া যায় ; এ নাস্তিকতার ভাব স্বতন্ত্র, ইহা কি বুদ্বিচলন, কি বিকৃত মতি, কি কৰ্ম্মদোষ, কি ভ্রান্তমতি, ইহার কিছুরই অনুসরণে নহে। ইহা সাময়িক সখ বা ফেসিয়ানের অনুসরণমাত্র । যে ফেসিয়ানের অনুকরণে কখন হিন্দু, কখন ব্রাহ্ম, কখন খ্ৰীষ্টান ; যাহার অনুসরণে দাড়ি চসম৷ কোট পোষাকে নিত্য নুতন আকৃতি পরিবর্তন হইয়া থাকে ; এ নাস্তিকতাও সেই ফেসিয়ান হইতে উৎপন্ন। কোন স্কুলপাঠ্য তর্কদর্শন, কোন শিক্ষকবিশেষের শ্লেষাত্মক বাক্যবিশেষ, বা ইয়ারগণের তদানীন্তন মতিগতি, তদ্রুপ মত পরিবর্তনের পক্ষে যথেষ্ট । বঙ্গসন্তান যেমন সারশূন্ত আস্তিকতায় এবং ধৰ্ম্মপথে, তেমনি সারশূন্ত নাস্তিকতায় এবং অধৰ্ম্মপথে ; অধিকন্তু উভয় দিকেই বচনের ছড়াছড়ি করিয়া থাকে।