পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭২ গ্রীক ও হিন্দু । সহজে ছড়াইতে পারা যায় না ; এজন্য তাহার অনিবাৰ্য্য প্রভাব; মানবকে তখনও বহুপরিমাণে ভয়-নম্র করিয়া রাখে । এপিকু্যরসে সেই ভয়-নম্রভাবের প্রবলতা হেতুই, তাহার বর্ণিত তত্বে তেমন অমিশ্রিত অসতের প্রাদুর্ভাব দেখিতে পাওয়া যায় না । তাহার পর, আরও এক কথা আছে। যে পদার্থ যে পরিমাণে শ্রেষ্ঠ বা অপকৃষ্ট, তাহার বিকারও সেই পরিমাণে অধিক বা অল্প মন হইয়া থাকে । গ্রীকদিগের আস্তিকতা কখন উচ্চ অঙ্গের ছিল না, সুতরাং তাঁহাদের নাস্তিকতাও অতিশয় বীভৎস আকার ধারণ করিতে পারে নাই । আরিষ্টিপুসের সাময়িক নাস্তিকতা আপাততঃ নিতান্ত বীভৎস আকারের বলিয়া বোব হয় বটে, কিন্তু যেমন কোন প্রকার অসতেরই অবলম্বনে দোষ নাই বলিয়া আরিষ্টপুসের দ্বারা ঘোষিত হইয়াছে, তেমনি আবার কোন অসতই, অন্ততঃ ক্ষতিকর অসৎ সামাজিকতার খাতিরে যে অবলম্বনীয়, ইহাও তাহার দ্বারা শিক্ষা দেওয়ার পক্ষে ক্রটি হয় নাই । ফলতঃ সমগ্র ধরিতে গেলে, গ্রীকের নাস্তিকতাকে তাদৃক প্রবল প্রচণ্ড বলা যায় না, নম্রতা এবং সংযতভাব তাহাতে যথেষ্ট পরিমাণে দেখিতে পাওয়া যায় এবং মুখে যত ফলিত, কাজে তত পরিণত হইত না । হিন্দুর ভাব কিন্তু সেরূপ নহে। গ্রীকের আত্মিকবিষয়িণী চিন্তাশক্তি ক্ষীণ বটে, কিন্তু তাহার বাহাদর্শনশক্তি অতিশয় তীব্র এবং বৈজ্ঞানিক ; সুতরাং আত্মিক সংসারে ইহাদের তত্ত্ব যদিও সঙ্কীর্ণায়তন এবং যদিও অসাধারণ সারপূর্ণ নহে বটে, কিন্তু যাহা কিছু ইহাদের দ্বারা উদ্ভাবিত ও উপলব্ধ, তাহ অতিশয় সুসজ্জিত, সুগ্রথিত ও মনোহর ; এবং সেজন্ত, ইহাদের নাস্তিকতার ভিতরেও যে নম্রতা, মাধুৰ্য্য এবং সংযতভাব যথেষ্ট দেখিতে পাওয়া যাইবে, তাহাতে আশ্চর্য্যের বিষয় কিছুই নাই। এ দিকে হিন্দুর চিন্তাশক্তি স্বভাবতঃই