পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tRo গ্রীক ও হিন্দু। উম্বেলিত হইয় উঠে সত্য, কিন্তু সে উদ্বেলন ও তদ্যুৎপন্ন কাৰ্য্যফল অধিকক্ষণ ধারণা করিয়া রাখিতে পারে না ;–পরলোক ও পারলৌকিক সুখের নিমিত্ত উপার্জন সম্বন্ধে গ্রীকদিগের ঠিক এইরূপ ভাব। যেমন করিয়াই দেখ, দেখিতে পাইবে ইহারা সৰ্ব্বতোভাবে সংসারী ও সামাজিক এবং সাংসারিক মুখে পূর্ণভাবে মগ্ন। . তাহা ন হইলে দেশহিতার্থে, সমাজের প্রতি স্নেহে, আপন সন্তানকে ইঙ্গিতমাত্রে বলি দিতে পারিত না ;—ম্পার্টান জননী প্রকৃতিদত্ত পুত্রস্নেহত্যাগে, বিকলাঙ্গ পুত্র পরিত্যাগ বা ক্ষীণাঙ্গ পুত্রের শরীরনাশে, কান্নার বদলে হাসির লহরী উঠাইতে পারিত না । ইহারা সন্তান রণে হত হইয়াছে শুনিলে শোকাক্রর পরিবর্তে আনন্দাশ্র বিসর্জন করিত। (৩) ফলতঃ সামাজিকতার খাতিরে এখানে কুলকামিনীগণ পৰ্য্যন্ত যেরূপ আগ্রহ ও নির্ঘায়িকতা দেখাইত, বীরপিতা দশরথও তাহ পারেন নাই। ব্ৰহ্মদ্বেষিণী তারক রাক্ষসীর বিনাশার্থে বিশ্বামিত্র রাম ও লক্ষণকে লইয়া যাইতে চাহিলে, দশরথ কাদিয়াই আকুল। (৪) এই সামাজিকতার প্রতি স্নেহহেতুই হেক্তরঞ্জননী, হেক্তরকে সহসা রণস্থল হইতে প্রতিনিবৃত্ত হইতে দেখিয়া, আশ্চৰ্য্যজ্ঞানে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল,— o I Cecero-Lib. I. ৪ । রামায়ণ ১।২।১—১৪ । অপেক্ষাকৃত অধুনাতন কালে রাজপুত রমণীতে বহু পরিমাণে গ্রীক রমণীর ছায়াপাত দেখিতে পাওয়া যায়, যদিও ভারতের দুর্ভাগ্যক্রমে ফলের অঙ্কে তাহাতে বিশেষ কিছুই ফলে নাই। ফলতঃ কি প্রাচীন, কি পরবর্তী, সময়ে, হিন্দুর বীরত্ববুদ্ধি বস্তুতঃ যে কিছু কম ছিল তাহা মহে। কিন্তু সে বীরত্বে সত্যনিষ্ঠ ও সদগুণাবলীর সমাবেশ হেতু, গোয়ারগোবিন গ্রীকবীরত্ব বা যে কোন পাশ্চাত্য বীরত্বের নিকট তাহাকে হারি মানিতে হইয়াছে। সত্য সত্যই বলুকের বলের অপেক্ষ সিংহব্যাম্রাদির বল কিছু বেশী নহে ; কিন্তু তথাপি তাহাদের সে বলে হিতাহিতজ্ঞানশূন্থ পশুত্ব ঙ্গেত, সমসংখ্যক প্রতিদ্বন্দিতায় বন্দুকের বলকে প্রায়ই হারি মানিতে হয়।