পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যুক্তি-তর্ক

 সভাপতি ধীরকণ্ঠে বলিলেন,—“তা হোক না। আমাদের গোলার কতই আর দাম হবে! আমি তা’ও হিসাব করেছি। এই দেখুন—৫৪৫৭৮১ টাকা। এ সামান্য টাকা তুল্‌তে ক’দিন লাগ্‌বে? আপনারা দেখ্‌বেন, চারদিক থেকে বৃষ্টির ধারার মত টাকা এসে প’ড়বে।”

 সমিতির মন্তব্যগুলি যখন সাধারণ্যে প্রচারিত হইল, তখন কেহ কেহ বলিলেন, প্রায় ২৫০ মণ ভার একটা গোলা নিক্ষেপ করিতে পারা যায় এমন কামান প্রস্তুত করা কি সম্ভব? কামানেরই বা অত শক্তি কোথায় —বারুদেরই বা এমন ক্ষমতা কোথায়। সভাপতি বার্বিকেন শুনিয়া হাসিলেন। মনে মনে কহিলেন, সেই মধ্যযুগে, ১৪৫৩ সালে, দ্বিতীয় মহম্মদের রাজত্বকালে কনষ্টাণ্টিনোপল যখন অবরুদ্ধ হয়, তখন ২৩ মণ ৩০ সের ওজনের এক একটা পাথরের গোলা শত্রুদের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল, আর এই সুসভ্যযুগে ২৫০ মণ ওজনের গোলা চালাইতে পারা যাইবে না? মল্টার সেণ্ট-এলেম্ দুর্গ হইতে যে গোলা নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল, তাহার ওজন ছিল ৩১ মণ ১০ সের। একালে কামানের পাল্লা বাড়িয়াছে বটে, কিন্তু গোলা-গুলির ওজন কমিয়াছে। আমরা পাল্লাও বাড়াইব—ওজনও বাড়াইব।

 পরদিন আবার সভা বসিল। বার্বিকেন কহিলেন—

 “বন্ধুগণ! সেদিন আমরা গোলা তৈরি করেছি,—আজ কামান গড়বো। কামানটা হয়ত খুব প্রকাণ্ডই করতে হবে। কিন্তু আমেরিকার শিল্প-নৈপুণ্য জগদ্বিখ্যাত। প্রথম কথা হচ্ছে এই যে, ৯ ফিট্ ব্যাস এবং ২৫০ মণ ওজনের যে গোলা তাকে কেমন ক’রে প্রথমেই প্রতি সেকেণ্ডে ১২০০০ গজ বেগে চালিয়ে দেওয়া যাবে।”

১৭