পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রলোকে যাত্রা

ঘণ্টায় ৮৪০ মাইল, দিনে ২০১০০ মাইল—বৎসরে ৭৩৩৬৫০০ মাইল! অর্থাৎ ভ্রমণ কালে বিষুবরেখার উভয় পার্শ্বে পৃথিবীর যে বেগ হয় তাই। সুতরাং মনুষ্য নির্ম্মিত সামান্য একটা ২৪ পাউণ্ডার গোলার চন্দ্রে যেতে ১১ দিন, সূর্য্যে পৌঁছিতে ১২ বৎসর এবং সৌর জগতের প্রান্ত সীমায় নেপচুণে উপস্থিত হ’তে মাত্র ৩৬০ বৎসর লাগে। তা হ’লে নরশক্তি দেবশক্তি অপেক্ষা দুর্ব্বল কিসে?

 সভাপতি বার্বিকেন কহিলেন,—“বন্ধুগণ, বিবাদে কাজ হবে না—স্থিরচিত্তে বিচার করুন। নতুবা মীমাংসায় আসা যাবে না। আমিও জানি, কামান নির্ম্মাণের সাধারণ নিয়ম অবলম্বন ক’র্‌লে আমাদের চ’ল্‌বে না। আমার বিবেচনা হয়, আমাদের কামানের দৈর্ঘ্য হ’বে ৯০০ ফিট্‌।”

 অনেক তর্ক-বিতর্কের পর সকলে সভাপতির প্রস্তাবই গ্রহণ করিলেন। বার্বিকেন বলিলেন,—“৯০০ ফিট্‌ লম্বা হ’লে নলটা অন্ততঃ ৬ ফিট্‌ পুরু হওয়া চাই—নৈলে গ্যাসের চাপ সইবে কেন। আমি মনে করি, এ কামানটা মাটীতেই ছাঁচে ঢালা হ’বে। ঢাল্‌বার সময়ে হিসেব ক’রে নলের ছিদ্র ক’র্‌তে হ’বে। তারপর যখন উর্দ্ধমুখে বসাব, তখন অষ্টে-পৃষ্ঠে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে, ভারী পাথর দিয়ে গোড়াটা গেঁথে দিলেই চ’ল্‌বে।”

 মেজর। কামানের নল কি রাইফেলের মত পাক দেওয়া হ’বে?

 বার্বিকেন। না—সাদা মসৃণ নলই ভালো। পাক দেওয়া নল থেকে গোলা বাহির হ’লেই তার বেগ কিছু কমে।

 ম্যাট্‌সন্ আনন্দে করতালি দিয়া বলিলেন,—“কি চমৎকার! কামান ত’ তবে গড়া হ’য়েই গেল দেখ্‌ছি।”

২০