পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মাইকেল আর্দ্দান

 আর্দ্দান। তা’ ত’ বটেই! তা’ যেটা যেমন উপস্থিত হ’বে, তেমনি করা যাবে। আমি ত’ একজন মূর্খ অজ্ঞ লোক। গ্রহাদিতে কোন জীব বাস করে কিনা তা’ ঠিক জানি না। জানি না বলেই ত’ দেখ্‌তে যাচ্ছি।”

 চারিদিক হইতে তখন একটী বিপুল হল্‌হলা রব উত্থিত হইল। শ্রোতৃমণ্ডলী একটু শান্ত হইলে পর মাইকেল আর্দ্দান বলিলেন,—

 “বন্ধুগণ! গ্রহ নক্ষত্রাদিতে যে জীব বাস করে, ইচ্ছা করলে তার অনেক প্রমাণ দিতে পারা যায়। সে উপদেশ দিবার জন্য ত’ আমি এখানে আসি নাই। যদি কেহ বিশ্বাস করেন যে সৌরজগৎ বাসের যোগ্য নয়, তাঁকে এই কথাই ব’ল্‌তে চাই যে আমাদের এই ক্ষুদ্র পৃথিবীটাই যে বাস্তবিকই বাসের যোগ্য তার প্রমাণ কি? আপনারা দেখ্‌ছেন ত’ যে পৃথিবীর উপগ্রহ মাত্র একটী। আর এমন গ্রহও আছে যাদের উপগ্রহের সংখ্যা একের অধিক। তবুও সেগুলি হ’লো না বাসের যোগ্য—এ কথা কি কেহ বিশ্বাস ক’র্‌তে পারে? পৃথিবীর ঋতুভেদ দেখুন কি একটা অসুবিধার ব্যাপার! কখনো দারুণ গ্রীষ্ম, কখনো দারুণ শীত! পৃথিবী আপন অক্ষ-রেখার উপর একটু বেশী বক্রভাবে অবস্থিত থেকে সূর্য্যকে প্রদক্ষিণ করে বলেই ত’ দিন ও রাত্রি এবং ঋতুভেদ। এই ঋতু পরিবর্ত্তনের সময়েই যত রোগ এসে আমাদের ধরে! কিন্তু জুপিটারকে দেখুন দেখি। সে তার অক্ষরেখার উপর সামান্য বক্রভাবে অবস্থিত। সুতরাং সে স্থানে ঋতুভেদ নাই—রোগও তাই কম হ’বেই! জুপিটার যে এই বিষয়ে পৃথিবী অপেক্ষ শ্রেষ্ঠ তা’ ত’ বোঝাই যাচ্ছে।”

৪৩