মাইকেল আর্দ্দানের কথা শুনিয়া সভার লোক উৎসাহে করতালি দিতে লাগিল। সভা যখন আবার শান্ত হইল, তখন একজন শ্রোতা গুরু-গভীর-কণ্ঠে কহিলেন,—
“মহাশয়, আপনি ব’ল্ছেন যে চন্দ্রে জীবের বাস আছে। তা’ হ’লে তারা নিশ্চয়ই নিঃশ্বাস লয় না। চন্দ্রলোকে ত’ বাতাস নাই।”
“তাই নাকি? কেমন করে’ সেটা জান্লেন?”
“পণ্ডিতেরা বলেন।”
“বটে?”
“নিশ্চয়ই।”
“দেখুন, যাঁরা জেনে শুনে দেখে পণ্ডিত, তাঁদের উপর আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে। যাঁরা কিছু না জেনেই পণ্ডিত তাঁরা ঘৃণার পাত্র! আপনি বোধ হয়, মনে মনে ভাব্ছেন যে চন্দ্রে বাতাস নাই!”
“তার অসংখ্য অখণ্ডনীয় প্রমাণ আমি দিতে পারি। আপনি বোধ হয় জানেন যে, যখন সূর্যের কর বাতাসের ভিতর দিয়ে আসে, তখন ঠিক সরল রেখায় আাসতে পারে না—একটু বক্রভাবে আসে। একেই বলে আলোক রশ্মির পরাবৃত্তি। চন্দ্র যখন নক্ষত্রকে আবৃত করে, তখন নক্ষত্রের আলোক-রেখা চন্দ্রমণ্ডলের প্রান্তভাগ ঘেঁসে আসে, কিন্তু তিল মাত্র পরাবৃত্তি ঘটে না। এতেই ত’ প্রমাণ হ’চ্ছে চন্দ্রে বাতাস নাই।”
একটু বিদ্রূপের কণ্ঠে আর্দ্দান কহিলেন, “তাই নাকি?”
প্রশ্নকারী গম্ভীরভাবে উত্তর দিলেন,—“তা’ বৈ কি। ১৭১৫ সালে জ্যোতির্ব্বিদ্ লুভিলে এবং হেলি চন্দ্রগ্রহণ পর্য্যবেক্ষণ ক’রেছিলেন।