পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাত্রা

 আর্দ্দান্। ঠিক বার্বিকেন্। সেটা এঁদের করতেই হবে। আর কিছু না হোক্, মধ্যে মধ্যে এঁরা খাবার-টাবার ত পাঠাতে পারবেন।

 এ কথা শুনিয়া ম্যাট্‌সনের হৃদয়ের ভার অনেক কমিয়া গেল। তিনি উৎসাহিত হইয়া কহিলেন,—“প্রতি বৎসর বড়দিনের সময় আপনারা খাবার পাবেন, আর সেই সঙ্গে সঙ্গে পাবেন, সমস্ত যুক্ত-রাজ্যের আশীর্ব্বাদ।”

 বিদায়ের ক্ষণ আসিল। ম্যাট‍্সন্ আবেগভরে বন্ধুদিগের সহিত কর মর্দ্দন করিলেন। এ দিকে দুই মাইল দূরে পর্ব্বত-শিখরে দাঁড়াইয়া এঞ্জিনিয়র মার্টিসন্ তখন একদৃষ্টে তাঁহার ঘড়ীর কাঁটার দিকে চাহিয়াছিলেন।

 আর কালবিলম্ব না করিয়া নিকল্, আর্দ্দান্ ও বার্বিকেন্ যন্ত্রের সাহায্যে গোলকের মধ্যে নামিলেন। সেখানে তখন কি সূচীভেদ্য অন্ধকার! জাতীয় সঙ্গীতের ধ্বনি তখনো তাঁহাদের কর্ণে আসিয়া পৌঁছিতেছিল। গোলকের মধ্যে নামিয়া তাঁহারা প্রবেশপথ রুদ্ধ করিয়া দিলেন। ভূপৃষ্ঠের সহিত তাঁহাদের সকল সম্বন্ধ দুর হইয়া গেল!

 যতই সময় নিকট হইতে লাগিল, দর্শক-মণ্ডলী ততই উদ্বিগ্ন ও চঞ্চল হইতে লাগিল। ক্রমে জাতীয় সঙ্গীত থামিয়া গেল, সহস| হাস্য-কৌতুক স্তব্ধ হইল। সেই বিরাট প্রান্তর—প্রান্তর মধ্যে সেই বিশাল আর্দ্দান‍্নগরী তখন একেবারে নীরব হইল। মনে হইতে লাগিল, সেই লক্ষাধিক লোকের হৃদয়ও যেন তখন আর স্পন্দিত হইতেছে না। সকলে তখন কামানের মুখের দিকে চাহিয়া রহিল।

 মার্চিসন্ নীরবে তাঁহার ঘড়ির কাঁটার দিকে চাহিয়াছিলেন।

৭১