পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হংকং।
১০১

আসে। অতি জঘন্য দ্রব্যাদি,—যাহা সকল দেশের সকল লোকের হেয়, চীনেম্যানরা তাহা আদরের সহিত খায়। যদিও তেলাপোকা খাওয়া দেখি নাই, কৃমিজাতীয় একরূপ পোকা খাওয়া স্বচক্ষে দেখিয়ছি। অতি উপাদেয় খাদ্য বলিয়া তার জন্য আলোহিদা বেশী দাম দিতে হয়। ছোট ইন্দুর, বড় ইন্দুর ভাজা দোকানে দোকানে টাঙ্গান থাকে। পাখীর মধ্যে হাঁস ইহাদের বড় প্রিয় খাদ্য। সুধু পালক ও নাড়ি-ভূঁড়ি বাদে পায়ের নখ হইতে মুখের ঠোঁট অবধি রাখিয়া আস্ত ভাজা হয়। চতুষ্পদের মধ্যে পাঁঠা, ভেড়া প্রভৃতি উপাদেয় মাংস থাকিতে ইহারা শৃকরমাংসই সর্ব্বাপেক্ষা প্রিয় বলিয়া মনে করে। তারমধ্যে আবার সর্বাপেক্ষা সুস্বাদু অংশ নাসিকার অগ্রভাগটুকু। জীব জন্তুর নাড়ী ভূঁড়ির ভিতর হইতে বিষ্ঠাদি সাফ করিয়া তার ভিতর পোড়া মাংস পুরিয়া ভাজা অতি উপাদেয় খাদ্য। আর চর্ব্বি ও রক্ত দিয়া এক প্রকার ঝোল প্রস্তুত হয়। তাতেই ডুবিয়ে এই সকল মাংস খাইতে তারা আরও ভালবাসে। আমার নিজের যদিও খাওয়া দাওয়া সম্বন্ধে বড় ঘৃনা নাই,তবু আমারও এ সব কথা মনে হলে স্থির-সমুদ্রে সমুদ্র-পীড়া হবার উপক্রম হতো! কিন্তু এরা যেরূপ পরিস্কার পরিচ্ছন্নভাবে খায়, তা দেখলে এত জঘন্য জিনিষ খাওয়ার সে বিকটত্ব তাহা কতক পরিমাণে ক'মে যায়।

 ষ্টীমারের উপরেই ফিরিওয়ালাদের নিকট বসিয়া চীনেম্যানরা কিরূপে খাইতে লাগিল, এখানে সেই বর্ণনাই করিলাম। নিজ নিজ বাড়ীতে ও হোটেল প্রভৃতি স্থানে যেরূপ আহার করে, তাহাও অনেকটা ঐরূপ। সচরাচর তারা চেয়ারে বা টুলে বসিয়া কাজ করে ও টেবিলে খায়। অনন্যোপায় না হইলে কখনও মাটিতে উবু হইয়া বসিয়া আহার করে না এবং কাজও করে না। জাপানীরা কিন্তু আমাদের মত মাটিতে বসিয়া আহার করিতে ভালবাসে এবং