পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপানী চিত্রকরের চিত্রশালা।
১০৯

কর্ম্ম-বিবেচনায় হরিণ ও পাখীকে নিজের হাতে খাওয়াইতেছেন। পাখীগুলি তাঁহার হাত হইতে খুঁটিয়া থাইতছে। পরস্পরের উপর প্রগাঢ় বিশ্বাস, কাহারও মনে সন্দেহ বা ভয়ের লেশমাত্র নাই। হরিণগুলির শিং নাই। বোধ হয়, অহিংসার দেশে থাকিয়া যন্ত্রগুলি অনাবশ্যক বলিয়া আর জন্মায় না।

 তাহাদের পাশেই “ক্রিসেন-থিমম্” (Crysaathemum) ফুলের প্রদর্শনীর চিত্র। এই ফুল জাপানের বড়ই প্রিয়। নানা রঙের সতেজ বড় বড় পাপড়িযুক্ত গাঁদা, সুর্যমুখীজাতীয় ফুল। প্রতি বৎসর এই ফুল ফুটবার সময় দেশ জুড়িয়া উৎসব হয়। ভিন্ন-ভিন্ন-আভাযুক্ত ফুলগুলি পাশাপাশি সাজাইবারই বা কি পারিপাট্য। ছবিখানির দিকে চাহিলে চক্ষু জুড়ায়।

 তাহার পাশেই(Cherry-blossom) নামক জাপানী আর এক প্রকার সুগন্ধি ছোট ফুল ফুটবার বাৎসরিক বসন্ত-উৎসবের নৃত্যের ছবি। রমণীগণ ফুলসাজে সাজিয়া, খোঁপায় ফুল গুঁজিয়া, গলায় ফুলের মালা, হাতে ফুলের বালা পরিয়া, সারিবন্দী হইয়া নৃত্য করিতেছেন। সকলেরই মুখে হাসি ও মনে আনন্দ উথলিয়া পড়িতেছে। কোনও মাদকদ্রব্য না খাইয়াই যেন ফুলের গন্ধে আর মানের আনন্দে মাতোয়ারা। শুনিলাম, জাপানে ফুলের এতই আদর যে, প্রত্যেক গৃহস্থের বাড়ীর প্রাঙ্গণে ফুলের বাগান আছে। তাহার কত যত্ন, কত পরিচর্য্যা। প্রত্যেক শুভ কার্য্যেই ফুলের আবশ্যক। কাহারও বাড়ী ফুল ফুটিলে পাড়া শুদ্ধ লোক তাহা দেখিতে আইসে।

 তাহার পাশেই কতকগুলি বীভৎস রসের ছবি। সেইগুলি দেখিয়া কতকগুলি জাপানী প্রথার পরিচয় পাইলাম, এই যা। নয় ত আমার সে সব ছবি দেখিতে একটুও ভাল লাগিল না। খুন খারাপী, মারামারি, কাটাকাটি প্রভৃতি আসুরিক লীলা কি ফুলের পাশে রাখা উচিত