পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
চীন ভ্রমণ।

হুইয়াছে? শুনিলাম, জাপানে নাকি এই বীভৎস রসের আদর আছে? যাত্রা বা অভিনয়ের আসরে হত্যাকাণ্ড সচরাচর সকলের সম্মুখে অভিনীত হইতে দেখা যায়। দর্শকবৃন্দ তাহাতে আনন্দ অনুভব করে। যে ছবিগুলির কথা বলিতেছি, তাহার মধ্যে কতকগুলি এই,—

 এক জন জাপানী সামুরাই “হারীকুরী” অর্থাৎ ছোরা দিয়া আপনার পেট চিরিয়া আত্মহত্যা করিতেছে। অপমানিত বা আপাদস্ত হইলে আত্মসম্মানরক্ষার জন্য এরূপ আত্মহত্যা করা বড়ই গৌরবের বিষয়। উপবিষ্ট অধ্যস্থায় ছোট ছোরা দিয়া নিজের পেটে একটি সোজা আঘাত করিয়াছে। তাহা হইতে রক্তের স্রোত বহিতেছে। দুর্ব্বলতাবশতঃ ঘাড়টি নত হইয়া পড়িতেছে। সেই ছোরা তাহার পর যদি আপনার গলাতেও দিতে পারা যায়, বা খাপের মধ্যে রাখিতে পারা যায়, তাহা হইলে গৌরবের আর সীমা থাকে না। তবে প্রথমে নিজেকে নিজে আহত করিলে পর চতুর্দ্দিকস্থ বন্ধুবৰ্গ তরবারির দ্বারা মস্তক ছেদন করিয়া তাহার মৃত্যুতে সাহায্য করে। নহিলে সে আস্তে আস্তে মৃত্যু আরও কষ্টকর হইত।

 তাহার পরই কতকগুলি চীন-জাপান ও রুষ-জাপানের জলযুদ্ধ ও স্থলযুদ্ধের ছবি। দুদ্ধর্ষ জাপানী সেনার পশ্চাদ্ধাবান ঢলঢলে পোষাক পরা চীন সেনারা উর্দ্ধশ্বাসে টিকি উড়াইয়া পালাইতেছে। দিগ্বিদিকজ্ঞানশূন্য হইয়া পালাইবার রকম দেখিলে এ কথন ও মনে হয় না যে, যথার্থই লড়াই কি তাহারা তাহা জানিয়া লড়াই করিবে বলিয়াই সৈন্যদলে ভর্ত্তি হইয়াছিল। জাপানী আঁকিয়াছে কি না, তাই হয় ত চীনেকে আরও হেয় করিয়া আঁকিয়াছে। এক একটি অগ্নিময় “বম্বশেল” সৈন্যদলের মধ্যে পড়িয়া শত সহস্র খণ্ডে বিভক্ত হইয়া অসংখ্য নরহত্যা করিতেছে। এ সব ছবি যেন চোখে বিঁধিতে লাগিল।