তার কারণ, মানুষের পরিশ্রমের দাম এত কম যে, সকল রকম কাজই, মানুষে করে। গাড়ী টানিবার ও মোট বহিবার জন্য ঘোড়া বা গরুর আবশ্যক হয় না। হংকং সহরটীর প্রায় সবই সমুদ্রের ধারে পাহাড়ে অবস্থিত। কেবল মাত্র ৪৮০ হাত চওড়া এক খণ্ড সমতলভূমি সমুদ্র ও পাহাড়ের মাঝে বাবধান। এই টুকু ছাড়া রাস্তা, গলিঘুজি সবই পাহাড়ের রাস্তার মত উচু নিচু; সুতরাং সে সকল স্থানে গাড়ীও কোন কাজে আসে না। তাই বেতনির্ম্মিত ও কাঁধেবওয়া সিডান চেয়ার নামক এক রকম চেয়ার পাহাড়ে উঠা-নামার জন্য ব্যবহৃত হয়। উহা দেখিতে অনেকটা ভারতবৰ্ষীয় পার্ব্বত্য দেশের ডাণ্ডির মত। চীন দেশীয় সম্ভ্রান্ত বংশীয় স্ত্রীলোকেরা সুন্দর সুন্দর কাজ করা রেশমের পোষাক পরিয়া ও অতি চিকণ করিয়া চুল বিনাইয়া একলা স্বাধীন ভাবে দোকানে দোকানো গন্ধ দ্রব্য, অলঙ্কার, রেশম ইত্যাদি সাজ সজ্জার জিনিষ কিনিয়া বেড়ায়। তাহাদের মুখশ্রী ও হাব ভাবে গাম্ভীর্য্য ভরা। অত যে লোক-জন ক্রেতা-বিক্রেতা, দোকানে কিন্তু টু-শব্দটী নাই। কাহারও মুখে উচ্চ কথা নাই। কেবল মৌমাছির চাকের মত অস্পষ্ট একটা শ্রীতি-মধুর শব্দ রাস্তায় শোনা যায় মাত্র।
কলিকাতার মত হংকং সহরে ও বৈদ্যুতিক ট্রাম চলে; কিন্তু পাহাড়ে উঠিবার ট্রাম সম্পূর্ণ অন্যরূপ। তাহাকে “পিক্ ট্ৰেণ” অর্থাৎ পাহাড়ের রেল বলে। সমতল ভূমির নিকট হইতে প্রায় ১৫০০ শত ফিট উচ্চে সেই ট্রাম উঠিয়াছে। তাই বাষ্প বা বিদ্যুতের সাহায্যে চলে না, মোটা তার দিয়া টানিয়া তোলা হয়। পাশাপাশি দুটি রেল, একটী দিয়া একখানি গাড়ী উঠে ও ঠিক সেই সময়ে অপরটী দিয়া অপর এক খানি নামে। পাহাড়ের উপর একটী এঞ্জিন আছে; সেইটী একই সময়ে একটীকে টানিয়া তুলে এবং অপরটিকে নামাইয়া দেয়।
সে ট্রামে চড়িয়া উঠা-নামা বড়ই আমোদজনক। গাড়ীগুলি মৃদু