বুলবুল ও কোকিলের মত দেখিতে। স্বরও অনেকটা সেই রূপ। ঘন ছায়াযুক্ত সে স্থানটি এত শীতল যে মনে হ’তে লা’গল পাতরে শুয়ে খানিকটা ঘুমাই। সে স্থানটি কিছু ভিজে বলিয়া তার চতুর্দ্দিকেই নানা রংএর সেওলা—“মস্” ও “ফার্ণ” রাশি রাশি জন্মিয়াছে। একটি চীনেম্যানের ছেলে সেই খানে, এক খানি ভিজে সেওলা ঢাকা পাতারের ধারে ব’সে ইস্কুলের পড়া প’ড়ছিল,—
“Thou fliest the vocal vale,
An annual guest in other lands
Another Spring to hail.”
‘হে পিকবর! যেমন বসন্ত ফুরায় অমনি তুমিও এ দেশ হ’তে পালাও। প্রতি বৎসর ভিন্ন ভিন্ন দেশে বসন্তের শুভাগমন গাহিবে বলিয়া তুমিও সেখানে গিয়া অভিণি হও।”
নির্জ্জন স্থানে অসীম অনন্তর সহিত আমাদের সম্বন্ধ আরো ঘনিষ্টতর হয়। তাই নিস্তব্ধ নির্জ্জন বলিয়া এই স্থানে প্রায়ই বেড়াইতে আসিতাম। এক দিন ঠিক সন্ধ্যার অন্ধকারে একটি ঝোপের ভিতর একটি জোনাকী পোকা দেখিলাম, এরূপ আমাদের দেশে ঝাঁকে ঝাঁকে পালে পালে দেখি! একাই উড়িয়া, উড়িয়া জ্বলিতেছে ও নিবিতেছে। আমাদের দেশের খদ্যোতের মত সতেজ ও উজ্জ্বল নয়। অনেকটা হীনপ্রভম্লান ও ম্রিয়মান— যেন স্বাস্থ্য হারাইয়া দেশে দেশে স্বাস্থ্য খুঁজিয়া বেড়াইতেছে!
আর একদিন দ্বিপ্রহরে অতি প্রচণ্ড রৌদ্রের তাপে একটী ছায়াতরুর তলায় বেঞ্চে বসিয়া আছি, —এমন সময় দূর হ’তে এক প্রকার ভারী চাপা গলার করুণ ডাক শুনিলাম। সে শব্দ যেন আমাদের দেশী বন্ধুর গলার মত চিরপরিচিত ব’লে মনে হলো। বহুদিন পূর্ব্বে যখন আমি স্বাস্থ্য, আশা ও উৎসাহ করে বৃন্দাবন,