বর্ম্মার দোকানে জিনিষ কিনিতে গিয়া অন্যত্র জিনিষ কেনার মত অত বিরক্তি বোধ হয় না। বোধ হয়, তাহার একটি কারণ, স্ত্রীলোকেরা বেচে বলিয়া। চীনে দেখিতাম, এক জন পুরুষ দোকানী পাঁচ ডলার মূল্য বলিয়া দশ সেণ্টে জিনিষ বেচে। এত ঠকাইবার প্রয়াস! কিন্তু এখানকার দোকানে স্ত্রীলোকেরা বস্তুতঃ আমাদের দেখিয়া প্রায় ঠিক ঠিক দাম বলে। বেশী দর দস্তুর করিতে হয় না। অসহায় বিদেশী বলিয়া স্ত্রীলোকসুলভ করুণ ভাব তাদের ব্যবহারেও দেখা যায়।
একটি ছাউনিওয়ালা বাজারে কিছু জনতা দেখে ভিতরে গিয়া দেখলাম, অনেকগুলি লোক জড় হয়ে কিসের মীমাংসা করিতেছে। এত লোক, তবু তত গোল নাই। আমাদের দেশে নিশ্চয়ই আরও গোলমাল শুনা যাইত। একটি নম্রমুখী যুবতীর সম্মুখে অনেকগুলি স্ত্রীলোক ছিল। যুবতী নিজের দোকানে বসিয়াছিল, নীচের একটি দেবদারু কাঠের বাক্সের উপর একটি শীর্ণকায় বৃদ্ধ বর্ম্মণ যেন মর্ম্মাহতের মত বসিয়াছিল। তার পাশেও অনেক লোক। এক সুরাটী মুসলমানকে জিজ্ঞাসা করিলাম, কি হ’য়েছে? শুনিলাম, এই যুবতী বৃদ্ধের স্ত্রী,হালে বিবাহিতা। রমণীর সহিত দোকানে প্রত্যহ এক বর্ম্মা যুবক আসিয়া অনেকক্ষণ পর্যন্ত গল্প করে,—রমণী তাহাকে চুব্রট উপহার দেয়। বৃদ্ধের প্রথম পক্ষের ছেলে দু’পুরবেলা ভাত দিতে এসে দেখে গিয়ে বাপকে ৰ'লেচে। তাই বৃদ্ধ, ব্যাপার কি ভাল করিয়া জানিবার জন্য নিজেই এসেছে। তার মুখের ভাব বড়ই কষ্টব্যঞ্জক,—প্রতিশোধেচ্ছার মত প্রচণ্ড নহে। যেন সন্দিগ্ধ ও অনুতপ্ত হইয়া ভাবিতেছে, কেন এমন অসময়ে এমন হলাহল পান করিলাম! যুবতী নম্রমুখী; কিন্তু তাহাকে অনুতপ্ত বলিয়া মনে হইল না। তার যেন প্রধান ভয়, এ সব গোলমাল শুনিয়া যদি সে বর্ম্ম যুবক আর তাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ কৱিতে না আসে! নয় ত প্রণয় ক’রে পা