পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সিঙ্গাপুর।
৫৩

জাহাজের জন্য পাথুরে কয়লা বোঝাই হইবার স্থান। এ অঞ্চলের সকল জাহাজই এখানে থামে। জাপান যাইবার জাহাজই ইউক, আর চীন যাইবার বা অষ্ট্রেলিয়া যাইবার জাহাজই হউক,—সকল জাহাজই এখানে আগে লাগে ও এখান হইতে কয়লা ও আবশ্যকীয় দ্রবাদি বোঝাই লয়। সিঙ্গাপুর যে কেবল বড় ব্যবসার স্থান বা কয়লা বোঝাই হইবার আড্ডা, তাহা নয়; এ স্হানটি অতি সুদৃঢ়রূপে রক্ষিত। এখনে একটী কেল্লা আছে, তাহা অতি সুকৌশলে গঠিত ও দুর্জ্জেয়।

 সিঙ্গাপুরের আবহাওয়া অতি সুন্দর। বিষুবরেখার অতি সন্নিকট, সুতরাং এস্থানটি খুব গরম হইবারই কথা; প্রকৃতপক্ষে এখানে কিন্তু বেশী গরম পড়ে না। সমুদ্রের নিকটবর্ত্তী সকল স্থানেই যেমন বেশী শীত বা বেশী গরম হয় না। এখানেও সেইরূপ। এখানে প্রায় সারা বছর ধরিয়াই একরূপ নাতিশীতোষ্ণ ঋতু বিরাজ করে। এখানে বর্ষাকাল বলিয়া কোনও কাল নাই। বৃষ্টি সারা বছরই মাঝে মাঝে হইয়া থাকে।

 যেখানে এমন চিরবসন্ত বিরাজমান, সেই স্থানের সেই ছোট ছোট পাহাড়ের উপরকার ছোট ছোট বাংলাগুলির দিকে চাহিলেই আমার মনে হইত,—যে ভাগ্যবান পুরুষেরা ঐ স্থানে বাস করেন,তাঁহারা কত সুস্থ শরীরে কত মনের সুখে থাকেন। উন্মুক্ত বিমল বাতাস দিবারাত্রি বাহিতেছে। কলিকাতার ঘন অবস্থিত ধূলি ও ধূমসমাকীর্ণ বাড়ীর তুলনায় এবাড়ীগুলি ত স্বৰ্গপুরী। অনন্ত সুনীল সমুদ্র চতুর্দ্দিকে বিস্তৃত। সূর্য্যোদয়ে, সূর্য্যাস্তে ও পূর্ণিমার বিমল আলোকে সমুদ্র বক্ষে নভোমণ্ডলের প্রতিবিম্ব পড়িয়া কতই না জানি শোভা হয়।