পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
চীন ভ্রমণ।

নীলরঙের, সামপান নীলরঙে্‌র, বাড়ীগুলিতে নীল রঙ মাখান ও সাইনবোর্ডগুলির হয় জমি না হয় হরফ নীল রঙের।

 এদের সুহজমের কারণ কি ও এমন সুগঠন মাংশপেশীবহুল দেহে অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রমের কুফলই বা কি,—সে সব কথা বিস্তৃতরূপে পরে বলিব। তাহা হইতে আমাদের দেশের লোকের অনেক শিখিবার আছে। তবে এই টুকু মাত্র এখানে বলিয়া রাখা আবশ্যক যে, চীনেদের ভিতরে হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব বড়ই দেখা যায়। পিনাঙ প্রবন্ধে রিকস ওয়ালার কথায় বলিয়াছি যে, দশ বার বৎসর এরূপ গুরুতর পরিশ্রম করিয়া তাহারা হঠাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হয়। কুলি ও নৌকার মাঝিরও সেইরূপ। হৃদরোগই এরূপ মৃত্যুর কারণ।

 প্রতোহ দিনের কার্য্য শেষ হইলে চীনে কুলিরা সমুদ্রে গা’ধুইয়া থাকে; কিন্তু মাথায় জল দেয় না, -পাছে বিনানীতে লোণা জল লাগে ও চুল ভিজিয়া যায়! মধ্যে মধ্যে আপনাদের কাপড়গুলিও কেচে দেয়। মাথা ধুইবার জন্য আলাহিদা দোকান আছে, সেখানে গরম জল ও সাবাঙ দিয়া মাথা ধুইয়া চুল বিনাইয়া দেয়। পূর্ব্বেই বলিয়াছি, ফিরিওয়ালারা ভাত, মাছ, মাংস, তরকারী ইত্যাদি বেচিয়া বেড়ায়। কোনও কুলিকে রেঁধে খেতে হয় না। দিনে তিন বার, খাইবার খরচ ১২ সেণ্ট মাএ। কাপড় জামা ছিঁড়িয়া গেলে চীনে ফিরিওয়ালী স্ত্রীলোক দুই এক সেণ্ট লইয়া তাহা রীপু করিয়া দেয়। শুইবার জন্য এদের একটি মাদুরি ও একটী কাঠের বা বাঁশের বালিশ মাত্র দরকার হয়। এরা কখনও আহারের সময় জলপান করে না, অথবা কখনও সরবৎ বা ঠাণ্ডা জল পান করে না। আবশ্যক মত ছোট ছোট পিয়ালায় স'বজে চা খায়; তাতে চিনি বা দুধ দেয় না। আবশ্যকীয় সকল দ্রব্যই ফিরিওয়ালারা সেই স্থানে আনিয়া যোগায়; সুতরাং তাদের কাজের ভাবনা ছাড়া আর কোনও ভাবনা ভাবিতে হয় না।