বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চীন সমুদ্র।
৬৯

বিড়ালের ব্যবহার অন্যরূপ। তাহারা ঠাঁই চেনে, লোক তত চেনে না। গৃহ অধিবাসী শূন্য হইলে তাহারা সেই খানে থাকিতে ভাল বাসে। চীনেরা এ হিসাবে দ্বিতীয় শ্রেণীভুক্ত। তাই স্বদেশপ্রিয় হইলেও ভাই মরিলে ভাই কাঁদে না। তাহার দুরবস্থায় অর্থ সাহায্য করিতে চাহে না। ইহার কারণ পরে বলিব।

 অতি দুর্ব্বল ব্যক্তি বা হৃদরোগগ্রস্ত রোগীর পক্ষে চীন সমুদ্রের মত ভীষণ সমুদ্রে হাওয়া খাইতে যাওয়া বড়ই ভয়ের কথা। অতিশয় বমির বেগে মৃত্যু ঘটা কিছুই আশ্চর্য নয়। আমাদের জাহাজে কিন্তু বায়ুপরিবর্ত্তনের জন্য সমুদ্রযাত্রা করিতেছেন, এমন অনেকগুলি রোগীও ছিলেন। কেহ বা বাতের জন্য, কেহ যক্ষাকাসের জন্য, কেহ অনেকদিন রোগে ভুগিয়া শরীর সারিবার জন্য বেড়াইতে যাইতেছিলেন। তাঁহারা প্রায় সকলেই অতি অল্পদিনেই বিশেষ উপকার পাইয়াছিলেন। শান্ত সমুদ্রযাত্রার মত শরীরের অমন উপকার আর কিছুতেই হয় না। তবে আমাদর জাতির অসুবিধার মধ্যে আহারর একটি মহা অসুবিধা ঘটে। কেবল মাংস অরুচিকর ও অসহ্য হইয়া উঠে; উহা সুসিদ্ধ হয় না বলিয়া স্বাস্থের পক্ষে অপকারও হয়। নিরামিষ আহারের মধ্যে ভাত,পাউরুট্‌,বিস্কু্‌ট,মাখ্‌ন,জ্যাম ও ফল পাওয়া যায়; কিন্তু কোনরূপ তরকারী নাই। কৌটার দুধ ছাড়া অন্য দুধ নাই। তবে নিরামিষ আচার দিয়া ভাত খাওয়া চলিতে পারে।

 চীন সমুদ্র অতি বিপদসঙ্কুল স্থান। যে কারণেই হউক, চীন সমুদ্রে বার মাসই অল্প-বিস্তর তুফান হয়। কিন্তু বৎসরের এই সময়,অর্থাৎ নভেম্বর হইতে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ইহা অতি ভয়ানক। সমুদ্র এরূপ তুফান ও তরঙ্গ-সমাকুল হওয়ার কারণ, মৌসুম পরিবর্ত্তন। যখন বঙ্গাপসাগরে মৌসুম পরিবর্ত্তনের সময় তুফান হয়, চীনসমুদ্র তখন কতকটা শান্ত থাকে; কিন্তু এই কয় মাস অহরহ অতি