জগন্নাথের রথ আমার প্রতাপও দেখ।” তখন হরিমোহন বৃদ্ধ তিনকড়ির মন দেখিতে পাইল । দেখিল, যেন শত্রু-আক্রমণে বিধবস্ত ধনাঢ্যা নগরী, সেই তীক্ষু ওজস্বিনী বুদ্ধিতে কত ভীষণ মূত্তি পিশাচ ও রাক্ষস প্রবেশ করিয়া শাস্তি বিনাশ করিতেছে, ধ্যানভঙ্গ করিতেছে, সুখ লুণ্ঠন করিতেছে। বৃদ্ধ প্রিয় কনিষ্ঠপুত্রের সঙ্গে কলহ করিয়াছেন, তাড়াইয়া দিয়াছেন ; বৃদ্ধকালের স্নেহের পুত্রকে হারাইয়া শোকে ম্ৰিয়মাণ, অথচ ক্রোধ, গর্ব, হঠকারিতা হৃদয়দ্বারে অর্গল দিয়া শাস্ত্রী হইয়া বসিয়া আছে। ক্ষমার প্রবেশ নিষেধ করিতেছে। কন্যার নামে দুশ্চরিত্রা বলিয়া কলঙ্ক বুটিয়াছে, বৃদ্ধ তাহাকে বাড়ী হইতে তাড়াইয়া প্রিয়কন্যার জন্য কাদিতেছেন ; বৃদ্ধ জানেন সে নির্দোষ, কিন্তু সমাজের ভয়, লোকলজ্জা, অহঙ্কার, স্বাৰ্থ স্নেহকে চাপিয়া ধরিয়াছে। সহস্র পাপের স্মৃতিতে বৃদ্ধ ভীত হইয় বারবার চমকিয় উঠতেছে, তথাপি পাপ প্রবৃত্তির সংস্কারে সাহস বা বল নাই। মাঝে মাঝে মৃত্যু ও পরলোকের চিন্তা বৃদ্ধকে অতি নিদারুণ বিভীষিক দেখাইতেছে। হরিমোহন দেখিল, মরণ-চিন্তার পশ্চাৎ হইতে বিকট যমদূত কেবলই উকি মারিতেছে ও কপাটে ঠক্ ঠক্ করিতেছে। যতবার এইরূপ শব্দ হয় বৃদ্ধের অন্তরাত্মা ভয়ে উনমত্ত