পাতা:জন্মভূমি (সপ্তদশ বর্ষ).pdf/৪১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭শ বর্ষ। সঙ্গিনী । ૨૭૭ বিষয় কোলাহল খুব আছে বটে কিন্তু তাহার ভিতর যেন একটা vacaney শূন্যতা দেখা যায়-শূন্যে, শূন্যে, মহাশূন্যে মন ঘুরিতে থাকে, কিন্তু আবার সংস্কারৰশে ভগ্নপক্ষতি হইয়া নিয়ে ফেরে। একি রকম অবস্থা ; আত্মার দেশ নাই, কাল নাই পাত্ৰ নাই, সর্বত্র বিচরণ করিবার ক্ষমতা আছে ; দেহটা আমাদিগের Clog আমাদিগকে টানিয়া রাখে ; এখন তোমার আর শোক নাই, তাপ নাই, দুঃখ নাই, সৰ্ব্বত্র বিচরণশীলতা হইয়াছে, রেলের অপেক্ষা পর্দার অপেক্ষা কিছুই নাই। এখন তোমার ‘বৃন্দাবনধাম নাহি হেরিলাম” এই কাতরোক্তি আর নাই।তুমি স্বেচ্ছা! বিহারিণী সৰ্ব্বদেশব্যাপিণীরূপে সৰ্ব্বস্থানে বিরাজ করিতেছ; বুঝি বা ক্ষুদ্রদেহে আবদ্ধ থাকিয়া পিঞ্জরে আবদ্ধ থাকিয়া আত্মার বিচরণশীলতা লোপ পায় ; স্বপ্ন- • রাজ্যে আত্মার অবিহত গতি সকলেরই অনুভব করি। কিন্তু এখন জাগ্ৰাৎ স্বপ্নে দেখিতেছি যে এই বনভূমি তোমাময় ; নিঝরিণী পথের ধারে কতই দেখিলাম— দুগ্ধের ন্যায়। ফেণরাশি উদগীরণ করিতেছে। কুলু কুলুরবে শ্রবণ, মন সুখিত করিতেছে—একি তোমার মধুরালাপ, একি তোমার সুবিমল হাসি ; আত্মার ক্ষমতা বোধ হয়। এরূপ আছে যে সমস্ত বিসৰ্জনবস্তুতে আপনাকে অনুপ্ৰবিষ্ট করাইতে পারে, তাহা না হইলে নিঝরিণীর মধুরতা কোথা হইতে আসিল ; বনভূমির মধ্যে এ সুবিমল হাসি কাহার ; দেহ বহন করিয়া আমি ঘুরিতেছি, - তুমি অশরীরিণী তোমার আনন্দ কতই তাহা কিরূপে অনুভব করিব, তুমি হাসিতে থাক, আমি দেখিতে থাকি ও ভাবের বিদ্যুল্লীলার ভিতর দিয়া তোমার সঙ্গের সঙ্গী হই-অথবা তাহাতে আমার ক্ষমতা কই ; এত কি করিয়াছি—কি তপস্যা অর্জন করিয়াছি, কি বর লাভ করিয়াছি, যাহাতে এখন তোমার সাথের সার্থী হইতে পারি।--আমি পারি না ও পারিব না বলিয়া বোধ হয়, কবে যে পারিব কখনও যে পারিব তাহার রাস্তা বহুদূর-ভাবিবার আবশ্যক নাই, তুমি সঙ্গিনীরূপে ঘুরিতেছ। ইহাই আমার পক্ষে যথেষ্ট —এই বনভূমি কেলুবৃক্ষে পরিপূর্ণ ; অত্যুন্নত বৃক্ষরাজি শ্ৰান্ত মানবের ন্যায় ভুজ বিস্তার করিয়া শোভা পাইতেছে— গাছে ছোট ছোট পাতা, তুমি বড় কষ্ট পাইয়াছিলে মরলোকে তোমার দেহ নানাকারণে ভাজা ভাজা হইয়াছিল তাই বুঝি আমাকে চারিদিক হইতে আরামস্থচক অবস্থা দেখাইবার জন্য এই পাৰ্বত্যকেলু বৃক্ষরূপে অবস্থান করিতেছে। তোমার শান্তি দেখিয়া আমার সুখ ; যে শান্তি শত চেষ্টায় মরলোকে পাও নাই যে শান্তির ব্যাঘাত অনেক সময়ে জ্ঞাতসারে ও অজ্ঞাতে বহুবার সংঘটন করিয়াছি সে