পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
জয়তু নেতাজী

ফৌজ ও গভর্ণমেণ্টের নেতাজী হইয়াও সুভাষচন্দ্র গান্ধীজীকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিয়াছিলেন, অতএব শেষ পর্য্যন্ত তিনি গান্ধীকংগ্রেসের আনুগত্য করিয়াছিলেন, এইরূপ যুক্তি দ্বারা সুভাষচন্দ্রের পৃথক নেতৃত্ব অস্বীকার করার বড় সুবিধা হইয়াছে। গান্ধীজীর প্রতি সুভাষচন্দ্রের শ্রদ্ধা যে কখনও লুপ্ত হয় নাই ইহা সত্য, কিন্তু নেতাজী সুভাষচন্দ্র তাঁহার সেই সমরাভিযানকালে গান্ধীজীর প্রতি যে এমন ভক্তি প্রদর্শন করিয়াছিলেন, তাহার অন্যতর এবং বিশিষ্ট কারণ ছিল। তৎপূর্ব্বে গান্ধীকংগ্রেস ‘কুইট ইণ্ডিয়া’ উচ্চারণ করিয়া ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্টের বিরুদ্ধে সম্মুখ-যুদ্ধ ঘােষণা করিয়াছে―নেতাগণ কারারুদ্ধ হইয়াছেন এবং ভারতে একটা বিপ্লবের ঝড় বহিয়া গিয়াছে; অতএব এই গান্ধী পূর্ব্বের গান্ধী নহেন, সুভাষচন্দ্রের চক্ষে তিনিও তখন বিদ্রোহী ও যুদ্ধার্থী―তাই গান্ধীজীর যুদ্ধঘােষণার মর্ম্ম এবং কংগ্রেসের প্রকৃত অভিপ্রায় পুরাপুরি না জানিয়াই তিনি, এতদিনে তাঁহার নীতিই জয়ী হইয়াছে এই বিশ্বাসে, গান্ধীজী ও তাঁহার কংগ্রেসকে অন্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন করিয়াছিলেন। পরে কারামুক্ত হইয়া গান্ধীজী সেই বিদ্রোহ সম্বন্ধে তাঁহার যে মনােভাব প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা সুভাষচন্দ্র যে জানিতে পারেন নাই, ইহাই তাঁহার সৌভাগ্য; সেই ‘কুইট ইণ্ডিয়া’র যুদ্ধঘােষণা রব আজ কোন্ সুরে নামিয়া আসিয়াছে!

 সুভাষ-চরিত্রের আর একটি বড় লক্ষণ অনেকেই লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন, কিন্তু হয় ত তেমন মনােযােগ আকর্ষণ করে নাই।