পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪২
জয়তু নেতাজী

হাত হইতে ঐ নায়েবীটা পাইবার জন্য অধীর হইয়া উঠিয়াছিল। পরে যখন সেই সর্ত্তগুলি মানিয়া লইয়া কংগ্রেস স্বাধীনতা লাভ করিল, তখন গান্ধীর মুখে হাসি আর ধরে না,―তিনি ব্রিটিশকে দুইবাহু তুলিয়া আশীর্ব্বাদ করিলেন, এবং ভারতবাসীকে কৃতার্থ হইয়া ভগবানের (তাঁহার সেই অহিংসার ভগবান) নিকটে কৃতাঞ্জলিপুটে কৃতজ্ঞতা নিবেদন করিতে বলিলেন।

 ইহাই পরবর্ত্তী ইতিহাস, সুভাষচন্দ্র ইহাই আশঙ্কা করিয়াছিলেন; ক্যাবিনেট-মিশনের সেই দানপত্র তিনি দেখিয়া যান নাই―তখন ওয়াভেল-প্রস্তাব লইয়া কংগ্রেসী নেতৃবর্গ দর-কসাকসি করিতেছিল। তাহাতেই তিনি ভয়ার্ত্ত হইয়া রেডিও-যোগে ভারতবাসীকে যে কাতর আবেদন ও সাবধান-বাণী পাঠাইতেছিলেন, তাহার কিছু আমি অন্যত্র উদ্ধৃত করিয়াছি।

* * *

 সুভাষচন্দ্রের গ্রন্থ হইতে আমরা গান্ধী ও গান্ধী-কংগ্রেসের এই যে পরিচয় উদ্ধার করিলাম, ইহাই বাহিরের ইতিহাস বটে, কিন্তু ভিতরে দৃষ্টিপাত করিলে একটা গভীরতর সত্যের আভাস মিলিবে। ঐ ইতিহাস একজন ব্যক্তির ইতিহাস, উহা আসলে ভারতের জনগণের বা বহুব্যক্তির মিলিত প্রচেষ্টার কাহিনী নয়। ঐ একজন ব্যক্তি তাঁহার একটি অতিশয় ব্যক্তিগত ও নিজস্ব সত্য-ধারণা বা ধর্ম্মমতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করিতে চাহিয়াছিলেন। তজ্জন্য তিনি সেইকালের ঐ রাজনৈতিক আন্দোলন এবং কংগ্রেসনামক পুর্ব্বগঠিত প্রতিষ্ঠানটিকে আশ্রয় করিয়াছিলেন। যে সমস্যা আদৌ ভারতের সমস্যা, যে বিশেষ সংকট হইতে ভারতবাসীকে উদ্ধার করিবার চেষ্টায় নানা বিফল প্রয়াস এবং নূতনতর উপায়-চিন্তা সেইকালের দেশপ্রেমিক ও জাতির কল্যাণ-