পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২৬৩

তাহাতেই আত্মাহুতি দিয়াছিলেন―ইহাই তাঁহারা উচ্চৈঃস্বরে এবং ক্রুদ্ধকণ্ঠে ঘোষণা করিবেন। আমি ইহারও কোন প্রতিবাদ করিব না। কিন্তু যাঁহাদের একটুও চিন্তা করিবার শক্তি আছে, এবং যাঁহারা একেবারে সংস্কার-বদ্ধ নহেন, তাঁহারাই বুঝিতে পরিবেন, গান্ধী-নীতি গোড়া হইতে শেষ পর্য্যস্ত একটা অতি গূঢ় এবং অতি দৃঢ় দ্বৈত-নীতিই ছিল। অধ্যাপক সরকার তাঁহার ঐ প্রবন্ধের শেষে যাহা বলিয়াছিলেন ভবিষ্যৎ ঐতিহাসিক সম্ভবতঃ তাহা একেবারে অস্বীকার করিবেন না―তিনি বলিয়াছেন,“গান্ধীকে সকলযুগেরচরম-সফলতা-প্রাপ্ত, বস্তুনিষ্ঠ রাষ্ট্রবীর, বা নং ১-শ্রেণীর রাষ্ট্রিক খেলোয়াড়বলা যাইতে পারে।”

 এই উক্তি সম্বন্ধে একটা বিষয়ে আমাদের আপত্তি আছে―ঐ “সফলতা-প্রাপ্ত”-কথাটিতে। গাছের উপরে উঠিয়া―অতি উর্দ্ধ হইতে পতনের ভয় অগ্রাহ্য করিয়া, সেই গাছের শাখাগ্র-ভাগ সবলে নাড়া দিয়া ফলটি মাটিতে ফেলিয়া দিল যে, সে তাহা পাইল না―পাইল যে, সে কেবল বৃক্ষকাণ্ডে হাত বুলাইতেছিল; ইহাই যদি ‘সফলতা-প্রাপ্তি’ হয়, তবে তাহা সত্য বটে; এমন কি, ‘খেলোয়াড়ি’ও হয়তে মিথ্যা নয়। কিন্তু ঐ ফল এমনই যে, উহা একজন পাড়িবে, আর একজন কুড়াইবে—তাহা হয় না; যে কুড়াইবে তাহাকেই পাড়িতে হইবে। তাই ফলপ্রাপ্তি যদি হইয়াও থাকে―সফলতাপ্রাপ্তি হয় নাই; কিন্তু আমরা ঐ ফলপ্রাপ্তিতেও বিশ্বাস করি না। এতক্ষণ এই যে আলোচনা করিলাম তাহা কেবল ঐ হিংসা ও অহিংসার জয়লাভ―কোনটা কতখানি সত্য, তাহাই দেখাইবার জন্য। যদি ইহাকেও জয়লাভ বলিতে হয়, তবে শ্রীযুক্ত এ, এন, সরকারের সহিত আমরাও বলি–lt was a bloodless victory forsooth, a victory of Ahimsa!”