সে যাহা হউক, রবীন্দ্রনাথ পাবনা সম্মিলনীতে গঠনমূলক কার্যের ধারা নির্দেশ করিলেন বটে, কিন্তু নিজে কয়েক বৎসর পর্যন্ত সে দিকে তেমন মনোনিবেশ করেন নাই। কাব্য ও সাহিত্য সৃষ্টির আনন্দের মধ্যেই তিনি ডুবিয়া গেলেন, ইউরোপে গিয়া বিশ্বসাহিত্য সমাজের সঙ্গে পরিচয় স্থাপন করিলেন এবং “নোবেল পুরস্কার” লাভ করিলেন। ইউরোপ হইতে ফিরিয়া কিছুদিন পরে তিনি তাঁহার গঠনমূলক স্বদেশ সেবার আদর্শ কার্যে পরিণত করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। ১৯১৪ সালে এই উদ্দেশ্য লইয়াই তিনি “শ্রীনিকেতন” স্থাপন করিলেন। “শান্তি নিকেতন” পূর্বেই স্থাপিত হইয়াছিল। কিন্তু সেই সময়ে এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়া তাঁহার আদর্শ কার্যে পরিণত করিবার পথে নানা অন্তরায় সৃষ্টি হইতে লাগিল। বোধ হয় এই কারণে ১৯১৫ সালে ‘বঙ্গীয় হিতসাধনমণ্ডলী’ (Bengal Social Service League) প্রতিষ্ঠিত হইলে তিনি সভাপতিরূপে উহাতে যোগ দিলেন এবং নিজের আদর্শ ও কার্যপ্রণালী ব্যাখ্যা করিয়া কয়েকটি বক্তৃতা করিলেন। ‘বঙ্গীয় হিতসাধনমণ্ডলী’র কার্যপ্রণালী তিনি নিজে নির্ধারিত করিয়া দেন। উহাতে ছিল—
(১) নিরক্ষরদিগকে অন্তত যৎসামান্য লেখাপড়া ও অঙ্ক শিখানো। (২) ছোট ছোট ক্লাস ও পুস্তিকা প্রচার দ্বারা স্বাস্থ্যরক্ষা, সেবাশুশ্রূষাদি সম্বন্ধে শিক্ষাদান। (৩) ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, নানাবিধ অজীর্ণ ও উদরাময় রোগ প্রভৃতির প্রতিষেধের