দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটক এই সময়েই বিদেশী অত্যাচারীর বিরুদ্ধে তীব্রকণ্ঠে বিদ্রোহধ্বনি তুলিয়াছিল।
এইরূপ যুগসন্ধিক্ষণে ১৮৬১ সালে রবীন্দ্রনাথ জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁহার ‘জীবন-স্মৃতি’তে বলিয়াছেন,—তিনি যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, সে পরিবারে পূর্ব হইতে স্বদেশী ও জাতীয় ভাব প্রবল ছিল। তাঁহার পিতা ও সহোদরগণ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রনাথ, সত্যেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ প্রমুখ বিশ্রুতকীর্তি পুরুষদের দানে জাতীয় জীবনের নানা দিক পুষ্ট হইয়াছে। বিশেষত, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের প্রবর্তিত ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’ যে স্বদেশী ভাব প্রচারের যথেষ্ট সহায়তা করিয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই। এইরূপ পরিবারের মধ্যে জন্মগ্রহণ করা তাঁহার পক্ষে সৌভাগ্যের বিষয় হইয়াছিল।
রবীন্দ্রনাথের শৈশবে “হিন্দু মেলা”র সৃষ্টি হয়। কংগ্রেসের জন্মের ১৮ বৎসর পূর্বে ১৮৬৭ সালে “হিন্দু মেলা”র সূচনা। ১৮৮০ সাল পর্যন্ত প্রতি বৎসর এই মেলা হইত। তখনকার দিনে দেশের যত জ্ঞানী, গুণী, চিন্তানায়ক, কবি, সাহিত্যিক প্রভৃতি ছিলেন, তাঁহারা প্রায় সকলেই “হিন্দু মেলা”য় যোগ দিয়াছিলেন। উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য— গণেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজনারায়ণ বসু, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি মনোমোহন বসু, শিশিরকুমার ঘোষ, নবগোপাল মিত্র প্রভৃতি।
জাতীয় ভাবের বক্তৃতা, জাতীয় সংগীত প্রভৃতির দ্বারা এই