সূচী ও কারুকার্য, দেশীয় ক্রীড়াকৌতুক, ব্যায়াম প্রভৃতি জাতীয় সমস্ত বিষয়ই প্রদর্শিত হইত। এই মেলা উপলক্ষে কবিতা প্রবন্ধাদিও পঠিত হইত।”
নবগোপাল মিত্রের কথায় জ্যোতিরিন্দ্রনাথ বলিয়াছেন, তিনি দেখা হইলেই, জ্যোতিরিন্দ্রনাথকে উত্তেজনাপূর্ণ জাতীয় ভাবের কবিতা লিখিতে অনুরোধ করিতেন। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সে অনুরোধ পালনও করিয়াছিলেন। হিন্দু মেলা বন্ধ হইবার পর বৃদ্ধকালে নবগোপালবাবু “কতকগুলি মড়াখেগো” ঘোড়া লইয়া একটি দেশী সার্কাসের দলও গঠন করিয়াছিলেন। ইহাই বাঙালীর প্রথম সার্কাস। মোট কথা, সর্ববিধ জাতীয় অনুষ্ঠানে নবগোপালবাবুর মহা উৎসাহ ছিল। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, জাতীয়ভাবের অন্যতম প্রধান উদ্গাতা এই মহাপ্রাণ ব্যক্তিকে বাঙালী জাতি স্মরণ করিয়া রাখে নাই। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ক্ষোভের সঙ্গে বলিয়াছেন,—“তিনি এত করিলেন, অথচ এখন তাঁহার নামও কেহ করে না। ইহা বড়ই আক্ষেপের বিষয়। এদেশে তাঁহার ন্যায় স্বদেশানুরাগী নীরব কর্মবীরের একটা স্থায়ী স্মৃতিচিহ্ন থাকা নিতান্ত আবশ্যক।”
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ নিজেও এই হিন্দু মেলার একজন প্রধান উৎসাহী কর্মী ছিলেন। তরুণ বয়স হইতেই তাঁহার প্রাণে জ্বলন্ত স্বদেশপ্রেম জাগ্রত হইয়াছিল। দেশবাসীর মধ্যে নানাভাবে জাতীয়ভাব প্রচারের তিনি চেষ্টা করিতেন এবং সেজন্য লোকলজ্জা, মান, সম্ভ্রম প্রভৃতি উপেক্ষা করিতেও তিনি দ্বিধা