বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৈশোর স্বপ্ন
১১

করিতেন না। সমগ্র ভারতের জন্য একটা “সার্বজনীন জাতীয় পরিচ্ছদ”-এর পরিকল্পনা তিনিই প্রথম করেন এবং সেই অদ্ভুত পোষাক পরিয়া দিবা দ্বিপ্রহরে রাস্তায় বাহির হইতেও তিনি লজ্জাবোধ করেন নাই। (রবীন্দ্রনাথ—‘জীবন-স্মৃতি’)। স্ত্রীস্বাধীনতার দৃষ্টান্ত প্রদর্শনের জন্য সেই সনাতনী রক্ষণশীল যুগে লোকনিন্দা অগ্রাহ্য করিয়া তিনি সস্ত্রীক ঘোড়ায় চড়িয়া জোড়াসাঁকোর বাড়ি হইতে গড়ের মাঠ পর্যন্ত বেড়াইতে যাইতেন। (জ্যোতিরিন্দ্রনাথ—‘জীবন-স্মৃতি’)। স্বদেশী শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসারের জন্য তিনি বহু অর্থ ব্যয় করিয়া ঋণগ্রস্ত হইয়াছিলেন। বাঙলা ভাষায় জাতীয় ভাবোদ্দীপক নাটক ‘পুরু-বিক্রম’ ও ‘সরোজিনী’ তিনিই প্রথম রচনা করেন। এই দুই নাটক তখনকার দিনে রঙ্গমঞ্চে মহাসমারোহে অভিনীত হইয়াছিল। ‘জ্বল জ্বল চিতা দ্বিগুণ দ্বিগুণ, পরাণ সঁপিবে বিধবা বালা’—এই বিখ্যাত গানটি ‘সরোজিনী’ নাটকে তরুণবয়স্ক রবীন্দ্রনাথ সংযোগ করিয়া দিয়াছিলেন। (জ্যোতিরিন্দ্রনাথ—‘জীবন-স্মৃতি’)। জ্যোতিরিন্দ্রনাথের রচিত বিখ্যাত জাতীয় সংগীত ‘চলরে চল্ সবে ভারত-সন্তান মাতৃভূমি করে আহ্বান’ বাঙলা সাহিত্যে অমর হইয়া আছে। গিরিশচন্দ্র ঘোষের আগমনের পূর্বে নাট্যকার হিসাবে জ্যোতিরিন্দ্রনাথই অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সংগীতকলাতে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের যে অসাধারণ প্রতিভা ছিল, তাহা সুবিদিত। কবিতা ও সংগীত রচনায় অগ্রজ জ্যোতিরিন্দ্রনাথের নিকটেই রবীন্দ্রনাথের