২
যৌবনের সাধনা
রবীন্দ্রনাথ যখন নবীন যুবক তখন বাঙলা দেশে ‘বঙ্কিমচন্দ্রের যুগ’। বঙ্কিমচন্দ্র কেবল সাহিত্যস্রষ্টা ছিলেন না, তৎকালীন বাঙলার চিন্তা ও ভাব জগতের একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন তিনিই। যাঁহারা মনে করেন, বঙ্কিমচন্দ্র কেবল বাঙলা সাহিত্যকে নূতন করিয়া গড়িয়াছিলেন, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখিয়া, সাময়িক পত্র প্রকাশ করিয়া দেশবাসীর চিত্তে মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি করিয়াছিলেন, তাঁহাদের দৃষ্টি অতীব সংকীর্ণ। প্রকৃতপক্ষে বঙ্কিমচন্দ্র ছিলেন একটা নবযুগের স্রষ্টা—নবীন বাঙালী জাতির পথপ্রদর্শক। সাহিত্যের মধ্য দিয়া তিনি যে প্রবল ভাবের বন্যা প্রবাহিত করিয়াছিলেন, তাহার তরঙ্গ রাষ্ট্রে, সমাজে, ধর্মে সর্বত্র আঘাত করিয়া জাতির সম্মুখে নূতন দ্বার খুলিয়া দিয়াছিল। এক কথায় ঊনবিংশ শতাব্দীর চতুর্থ পাদে তিনিই ছিলেন যুগনায়ক। কালিদাস হিমালয়ের বর্ণনা করিতে গিয়া বলিয়াছেন,—“পূর্বাপরৌ তোয়নিধী বগাহ্য স্থিতঃ পৃথিব্যা ইব মানদণ্ডঃ।” বাঙলার নবযুগের আন্দোলনে বঙ্কিমচন্দ্রের সম্বন্ধেও এই বর্ণনাই করা যাইতে পারে।
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদে পাশ্চাত্য শিক্ষা সভ্যতার