সেদিন যখন আসিবে, তখন পৃথিবীর যে সভায় ইচ্ছা প্রবেশ করিব—ছদ্ম বেশ, ছদ্ম নাম, ছদ্ম ব্যবহার এবং যাচিয়া মান, কাঁদিয়া সোহাগের কোন প্রয়োজন থাকিবে না।
“সকল দিক পর্যালোচনা করিয়া রাজা-প্রজার বিদ্বেষ ভাব শাসিত রাখিবার প্রকৃষ্ট উপায় এই দেখা যাইতেছে—ইংরেজ হইতে দূরে থাকিয়া আমাদের নিকট কর্তব্যসকল পালনে একান্ত মনে নিযুক্ত হওয়া। কেবলমাত্র ভিক্ষা করিয়াই কখনই আমাদের মনের যথার্থ সন্তোষ হইবে না। আজ আমরা মনে করিতেছি, ইংরেজের নিকট কতকগুলি অধিকার পাইলেই আমাদের সকল দুঃখ দূর হইবে। ভিক্ষা স্বরূপে সমস্ত অধিকারগুলি যখন পাইব, তখনো দেখিব অন্তর হইতে লাঞ্ছনা কিছুতেই দূর হইতেছে না—বরং যতদিন না পাইয়াছি ততদিন যে সান্ত্বনাটুকু ছিল, সে সান্ত্বনাও আর থাকিবে না।... ইংরেজের কাছে আদর কুড়াইয়া কোন ফল নাই, আপনাদের মনুষ্যত্বকে সচেতন করিয়া তোলাতেই যথার্থ গৌরব; অন্যের নিকট ফাঁকি দিয়া আদায় করিয়া কিছু পাওয়া যায় না, প্রাণপণে নিষ্ঠার সহিত ত্যাগস্বীকারেই প্রকৃত কার্যসিদ্ধি।”
এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ কংগ্রেস ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সের কয়েকটি অধিবেশনে যোগ দিয়াছিলেন, কিন্তু সর্বত্রই তিনি ‘আবেদন-নিবেদনের নীতি’র প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করিতেন এবং আত্মশক্তির সাধনার উপরেই জোর দিতেন। ১৮৮৬ সালে কলিকাতায় কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে