রবীন্দ্রনাথ যোগদান করেন এবং নিজের রচিত “আমরা মিলেছি আজ মায়ের ডাকে” এই গানটি করেন। তারপর ১৮৯৬ সালে কলিকাতায় যে কংগ্রেসের অধিবেশন হয়, তাহাতেও তিনি যোগ দেন। লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক এই অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। এই অধিবেশনেই রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিমচন্দ্রের বিখ্যাত জাতীয় সংগীত “বন্দে মাতরম্” নিজে সুরসংযোগ করিয়া গান করেন। সেই হইতে “বন্দে মাতরম্” গান রবীন্দ্রনাথের প্রদত্ত সুরেই প্রতি বৎসর কংগ্রেসে গীত হইয়া আসিতেছে। জনসাধারণের মধ্যেও এই সুর প্রচলিত হইয়াছে। সুতরাং জাতীয় আন্দোলনে ইহা রবীন্দ্রনাথের একটি বিশেষ দান বলা যাইতে পারে। ১৮৯৭ সালে নাটোরে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্স বা রাষ্ট্রসম্মিলনীর যে অধিবেশন হয়, তাহাতে রবীন্দ্রনাথ যোগ দিয়াছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ঐ অধিবেশনের সভাপতি। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে শ্রীযুত অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ ‘তরুণের দল’ ছিলেন। ঐ সময়ে এই সব রাজনৈতিক সম্মিলনীতে বক্তৃতা, প্রস্তাব প্রভৃতি ইংরেজী ভাষাতেই হইত। নাটোরের সম্মিলনে রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে ‘তরুণের দল’ দাবী করিলেন যে, বাঙলা ভাষাতেই সমস্ত কার্য পরিচালিত হইবে। ইংরেজীনবিস প্রবীণেরা প্রমাদ গণিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলে ভারী তরুণদের দাবীই তাঁহাদের মানিয়া লইতে হইল। অবনীন্দ্রনাথ তাঁহার ‘ঘরোয়া’ নামক গ্রন্থে এ বিষয়ে যে সরস বর্ণনা করিয়াছেন,
পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৪০
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ