৵৹
ঊনবিংশ শতাব্দীতে নব্য বাঙ্গালী জাতির অভ্যুদয় আধুনিক জগতের ইতিহাসে একটা স্মরণীয় ঘটনা। এই অভ্যুদয়ের মূলে কোন কোন প্রবল শক্তি কার্য করিয়াছিল, পণ্ডিত ব্যক্তিরা তাহা লইয়া কিছু কিছু আলোচনা করিয়াছেন, কিন্তু সে আলোচনা এখনও সম্পূর্ণ হয় নাই। ভবিষ্যতে আরও আলোচনা হইবে বলিয়া আশা করি। কিন্তু বহু শতাব্দীর পরাধীনতায় পীড়িত জাতির অন্তঃস্তল হইতে স্বাধীনতা ও জাতীয় সমুন্নতির একটা অদম্য আকাঙ্ক্ষা যে এই যুগে জাগ্রত হইয়াছে এবং তাহাই যে জাতিকে তাহার লক্ষ্যপথে দুর্নিবার আকর্ষণে পরিচালিত করিয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই। বহু মনীষী ও শক্তিশালী ব্যক্তি ঊনবিংশ শতাব্দীতে আবির্ভূত হইয়াছিলেন এবং তাঁহাদেরই সুদীর্ঘ তপস্যার ফলে বাঙলায় জাতীয় আন্দোলনের সৃষ্টি হইয়াছিল এবং সমগ্র ভারতে তাহা বিস্তৃত হইয়া পড়িয়াছিল। রবীন্দ্রনাথ সেই সব শক্তিশালী মনীষীদেরই অন্যতম এবং জাতীয় স্বাধীনতার জন্য তাঁহার তপস্যার দানও অসামান্য। ইহা তাঁহার জীবনের একটা গৌরবোজ্জ্বল অংশ। যাঁহারা এই দানকে ছোট করিয়া দেখিতে চাহেন, স্বজাতির ইতিহাসের সঙ্গে তাঁহাদের পরিচয় হয় নাই। উহার গভীর মর্ম তাঁহারা উপলব্ধি করিতে পারেন নাই, একথা দৃঢ়তার সঙ্গেই বলিব। এই কারণেই, বাঙলার জাতীয় আন্দোলন বা স্বদেশী আন্দোলনকে এই সব স্থূলদৃষ্টি ব্যক্তিরা “বুর্জোয়া আন্দোলন” বা “পাতি বুর্জোয়া আন্দোলন” ইত্যাদি অদ্ভুত নামে অভিহিত করিয়া থাকেন। কত বড় একটা বিরাট আদর্শ ঐ জাতীয় আন্দোলনের পশ্চাতে ছিল তাহা তাঁহারা দেখিতে পান না, বা দেখিবার চেষ্টা করেন না।
পরাধীন জাতির জীবনে ‘ভাব দাসত্ব’ একটা ব্যাধিবিশেষ। এক সময়ে পাশ্চাত্য সংশয়বাদ ও প্রত্যক্ষবাদ প্রভৃতি আমাদের শিক্ষিত