কেউ আর কিছু বলতে পারেন না। তবুও ঐ চেঁচামেচির মধ্যেই দু-একজন দু’একটা কথা বলতে চেষ্টা করেছিলেন। লালমোহন ঘোষ ছিলেন ইংরেজিদুরস্ত, তাঁর মত ইংরেজীতে কেউ বলতে পারত না, তিনি ছিলেন পার্লামেণ্টারী বক্তা,— তিনি শেষটায় উঠে বাঙলায় করলেন বক্তৃতা। কী সুন্দর তিনি বলেছিলেন,—যেমন পারতেন তিনি ইংরেজীতে বলতে, তেমনি চমৎকার তিনি বাঙলাতেও বক্তৃতা করলেন! আমাদের উল্লাস দেখে কে, আমাদের তো জয়জয়কার। কনফারেন্সে বাঙলা ভাষা চলিত হোলো। সেই প্রথম আমরা পাবলিক্লি বাঙলা ভাষার জন্য লড়লুম।” (‘ঘরোয়া’—৭৫-৭৬ পৃঃ)।
১৮৯৮ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রসম্মিলনের ঢাকা অধিবেশনেও রবীন্দ্রনাথ যোগ দেন। সম্মিলনে দেশীয় ভাষা, দেশীয় ভাব, জাতীয় পোষাক-পরিচ্ছদের সমর্থন করিয়া তিনি বক্তৃতা করেন। এই সময়েই বিজাতীয় অনুকরণ ও সাহেবীয়ানার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ ও ব্যঙ্গ বিদ্রূপের কশাঘাত করিয়া তিনি বহু প্রবন্ধ, কবিতা, গল্প, ব্যঙ্গ নাট্য প্রভৃতি রচনা করেন।
১৮৯৮ সালেই রাজদ্রোহের অভিযোগে লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক গ্রেপ্তার হন। রবীন্দ্রনাথ গভর্মেণ্টের এই কার্যের তীব্র সমালোচনা করিয়া প্রবন্ধ লেখেন এবং তিলকের মকদ্দমার ব্যয় চালাইবার জন্য অর্থ সংগ্রহেরও সহায়তা করেন। রাজদ্রোহ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করিবার জন্য