বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

আমাদের প্রত্যেককে একান্ত বাধ্যভাবে পালন করিতে হইবে। অন্যথা করিলে সমাজবিহিত দণ্ড স্বীকার করিব। সমাজের অধিনায়ক ও তাঁহার সহায়কারী সচিবগণকে তাঁহাদের সমাজনির্দিষ্ট অধিকার অনুসারে নির্বিচারে যথাযোগ্য সম্মান করিব। বাঙালী মাত্রেই এ সমাজে যোগ দিতে পারিবেন।”

 এই “স্বদেশী সমাজে”র পরিকল্পনা পরবর্তী কালে স্বদেশী আন্দোলনের উপর অশেষ প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল সন্দেহ নাই। অসহযোগ আন্দোলনের উপরও ইহার প্রভাব অস্বীকার করা যায় না।

 ১৯০৪ সালের আর একটি স্মরণীয় ঘটনা কলিকাতায় ‘শিবাজী উৎসব’। ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, বিপিনচন্দ্র পাল প্রভৃতি নব জাতীয়তাবাদীদের উদ্যোগে এই শিবাজী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। মহারাষ্ট্র-নেতা লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক এই উৎসবে যোগ দিবার জন্য পুনা হইতে কলিকাতায় আসেন। এই শিবাজী উৎসবের একটা প্রধান অঙ্গ ছিল শক্তিরূপিণী ভবানীর পূজা। ছত্রপতি শিবাজী মোগলের দাসত্বমুক্ত যে স্বাধীন ভারতের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন, তাহারই আদর্শ জাতির সম্মুখে ধরিবার জন্য এই শিবাজী উৎসবের পরিকল্পনা হইয়াছিল।

 বলা বাহুল্য, জাতীয় জীবনে যে নূতন শক্তি সংঘবদ্ধ হইয়া উঠিতেছিল, স্বাধীনতা লাভের যে আকাঙ্ক্ষা জাতির চিত্তে প্রেরণা যোগাইতেছিল, ‘শিবাজী উৎসব’ তাহারই বহিঃপ্রকাশ।