নব জাতীয়তাবাদীরা বঙ্কিমচন্দ্রের ভাবে কতদূর অনুপ্রাণিত হইয়াছিলেন, তাহার অসংখ্য দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র দুইটি দৃষ্টান্ত এখানে উল্লেখ করিতেছি। প্রথম “বন্দে মাতরম্ সম্প্রদায়”। উত্তর কলিকাতার দেশভক্ত শিক্ষিত যুবকেরা এই সম্প্রদায় গঠন করিয়াছিলেন। এই সম্প্রদায় রাজপথে “বন্দে মাতরম্” গান গাহিয়া জাতীয় ভাণ্ডারের জন্য অর্থসংগ্রহ করিতেন। তখনকার অনেক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিকে এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাজপথে “বন্দে মাতরম্” গান গাহিয়া যাইতে দেখিয়াছি। এই সম্প্রদায়ের সভাগৃহে জাতীয়ভাব প্রচারের উদ্দেশ্যে সভা-সমিতি, বক্তৃতা প্রভৃতিও হইত। কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় উহাতে মাঝে মাঝে যোগ দিতেন এবং স্বরচিত গান গাহিতেন।
দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত, কাঁঠালপাড়ায় বঙ্কিম-স্মৃতি উৎসব। বঙ্কিমচন্দ্রের পৈতৃক বাসভবনেই এই উৎসব হইয়াছিল। উৎসবের প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়। ‘বন্দে মাতরম সম্প্রদায়’ সদলবলে এই উৎসবে যোগদান করিয়াছিলেন এবং জাতীয় সংগীত গান করিয়াছিলেন। কলিকাতা হইতে কয়েক সহস্র লোক এই উৎসবে যোগ দিতে গিয়াছিল। কাঁঠালপাড়ার চতুষ্পার্শবর্তী গ্রামসমূহ হইতেও বহু লোক আসিয়াছিল। উৎসবের প্রধান অঙ্গ ছিল জাতীয় মেলা। বঙ্কিমচন্দ্রের বাসভবনের সম্মুখের বিস্তৃত মাঠে এই মেলা বসিয়াছিল। গ্রামের লোকেরা তাহাদের নানা কৃষিজাত ও কুটিরশিল্পজাত দ্রব্য মেলায় বিক্রয় করিতে আনিয়াছিল। যতদুর মনে পড়ে,