বঙ্গভঙ্গের ফলে দেশব্যাপী যে প্রবল আলোড়নের সৃষ্টি হইল, তাহার সম্মুখে এইরূপে প্রাচীন ও নবীন দুই দলই আসিয়া দাঁড়াইলেন। সৌভাগ্যক্রমে প্রাচীন নিয়মতান্ত্রিকতার ধারা এবং নবীন আত্মশক্তির ধারা কর্মক্ষেত্রে বহুল পরিমাণে মিলিত মিশ্রিত হইয়া গেল। গঙ্গা ও যমুনার দুই ধারা যেমন প্রয়াগ-সঙ্গমে আসিয়া মিলিত হইয়াছে, তেমনি করিয়া বাঙলার রাজনীতির এই প্রাচীন ও নবীন ধারা মিলিত হইয়া বিরাট স্বদেশী আন্দোলনে পরিণত হইল। স্বদেশী আন্দোলন যে এমন শক্তিশালী হইয়াছিল, দেশের চিত্তে সমস্ত দিক হইতে যুগান্তর সৃষ্টি করিয়াছিল, সমগ্র ভারতে উহার প্রভাব বিস্তৃত হইয়া পড়িয়াছিল, তাহার মূল কারণ ইহাই। ১৯০৬ সালে কলিকাতায় দাদাভাই নৌরজীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের যে অধিবেশন হইল, তাহাতে প্রাচীন ও নবীন দলের মিলিত শক্তির প্রভাব সুস্পষ্টরূপে ব্যক্ত হইল। বলিতে গেলে কংগ্রেসের আর সে পূর্বের মূর্তি রহিল না, উহা নবরূপান্তরিত হইল। আর বঙ্গভঙ্গের আদেশ প্রচারের পর দীর্ঘ সাত বৎসর ধরিয়া বাঙলা দেশ তাহার বিরুদ্ধে প্রবলভাবে আন্দোলন চালাইয়া “settled fact”কে যে “unsettled” করিয়াছিল, ব্রিটিশ গভর্মেণ্টের নিশ্চিত সিদ্ধান্তকে উল্টাইয়া দিয়াছিল, তাহাও এই সম্মিলিত শক্তির জোরেই সম্ভব হইয়াছিল।
রবীন্দ্রনাথ এই স্বদেশী আন্দোলনের মধ্যে প্রদীপ্ত ভাস্কর মূর্তিতে দেখা দিয়াছিলেন। তাঁহার প্রতিভার পরিপূর্ণ প্রকাশ