বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

দিতে লাগিল এবং “বন্দে মাতরম” ধ্বনি করিতে লাগিল। ফলে পুলিসের লাঠি তাহাদের মাথায় পড়িল, বহু ছাত্র বিদ্যালয় হইতেও বিতাড়িত হইল। শেষ পর্যন্ত এমন অবস্থা দাঁড়াইল যে, “বন্দে মাতরম্” ধ্বনি উচ্চারণ করাই রাজদ্রোহের তুল্য একটা অপরাধ বলিয়া গণ্য হইয়া উঠিল। বাঙলার নানাস্থানে, বিশেষত পূর্ববঙ্গ ও আসামে “বন্দে মাতরম্” ধ্বনি করিয়া বহু লোক পুলিসের লাঠি খাইল, অনেকে জেলেও গেল। এই সময়েই বরিশালে ‘বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্স’ কি ভাবে ম্যাজিস্ট্রেট ভাঙিয়া দেন এবং নেতারা কেহ কেহ গ্রেপ্তার হন, দেশবাসী নিশ্চয়ই তাহা বিস্মৃত হন নাই। এই কনফারেন্সেই মনোরঞ্জন গুহ ঠাকুরতার পুত্র চিত্তরঞ্জন পুলিসের পুনঃপুনঃ লাঠির আঘাত খাইয়াও অজ্ঞান হইয়া না পড়া পর্যন্ত কিছুতেই “বন্দে মাতরম্” ধ্বনি ত্যাগ করেন নাই। “বন্দে মাতরম্” সেই দিন হইতে সত্যই “জাতীয় মন্ত্রে” পরিণত হইল। ইহার জন্য কতজন যে দুঃখবরণ করিয়াছে, নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করিয়াছে, তাহার ইয়ত্তা নাই।

 স্বদেশী আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথের দান নানাদিক দিয়া অসামান্য। সভাসমিতিতে বক্তৃতা, সাময়িক পত্রিকায় প্রবন্ধ, কবিতা, গল্প প্রভৃতির দ্বারা দেশবাসীর চিত্তে যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা তিনি সঞ্চার করিয়াছিলেন, তাহা আমাদের জাতীয় জীবনে চিরস্মরণীয় হইয়া থাকিবে। তাহা ছাড়া আরও দুই দিক দিয়া স্বদেশী আন্দোলনে তাঁহার দানের প্রাচুর্য বিশেষভাবে