বিষয়ে তিনি উভয় দলের মধ্যবর্তী সেতুস্বরূপ ছিলেন বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। যাঁহাদের চেষ্টায় স্বদেশী আন্দোলনের সময় প্রাচীন ও নবীন দল একযোগে কাজ করিয়াছেন, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁহাদের মধ্যে প্রধান। তাঁহার “দেশনায়ক” প্রবন্ধে এইভাবে অনুপ্রাণিত হইয়াই তিনি সুরেন্দ্রনাথকে বাঙলার একমাত্র নেতা বলিয়া বরণ করিয়া লইবার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ করিয়াছিলেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ও তাঁহার সমমতাবলম্বীদের বহু চেষ্টা সত্ত্বেও প্রাচীন ও নবীন দলের মধ্যে ভেদ ক্রমেই বাড়িতে লাগিল এবং শেষ পর্যন্ত কোন কোন দিক দিয়া উহা মর্মান্তিক হইয়া উঠিল। “নরমপন্থী” (মডারেট) ও “চরমপন্থী” (একস্ট্রিমিস্ট) বলিয়া দুই দলের নামকরণও হইয়া গেল। কংগ্রেস কমিটির সভায়, নানাস্থানে জনসভায়, নরমপন্থী ও চরমপন্থী দলের কলহ ও বাগবিতণ্ডা চলিল। চরমপন্থীরা দলে ভারী, দেশের যুবক সম্প্রদায় তাঁহাদের সমর্থক, সুতরাং নরমপন্থীরা তাঁহাদের সঙ্গে আঁটিয়া উঠিতে পারিলেন না। কেবল বাঙলায় নয়, ভারতের সমস্ত প্রদেশেই—বিশেষত মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব ও মধ্য প্রদেশে নরমপন্থী ও চরমপন্থী দলের দ্বন্দ্ব প্রবল হইয়া উঠিল। অবশেষে ১৯০৭ সালে সুরাট কংগ্রেসে এই দ্বন্দ্ব আত্যন্তিকরূপে দেখা দিল। প্রবীণ নরমপন্থীরা ডাঃ রাসবিহারী ঘোষকে সভাপতি মনোনীত করিয়াছিলেন, কিন্তু নবীন চরমপন্থী দল তাহা মানিয়া লইলেন না, তাঁহারা তৎস্থলে লোকমান্য
পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৯২
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ