পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুরুদাস পত্র প্রকাশের সঙ্কল্প করেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রকাশের পূৰ্ব্বেই সন্তাস রোগে দ্বিজেন্দ্রলাল পরলোক গমন করেন। তাহার পূৰ্ব্বে বাঙ্গালায় তিন টাকার অধিক মূল্যের সুবৃহৎ কোন মাসিক পত্র ছিল না । তিনিই প্রথম ছয় টাকা মূল্যে মাসিক পত্রের প্রবর্তক । ভারত বিখ্যাত অদ্বিতীয় ব্যবহারজীব দানবীর পরলোকগত সীর রাসবিহারী ঘোষ মহাশয় তাহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা সুরেশ বাবুকে পাঠদশায় কলিকাতা হিন্দু হোষ্টেলের অবস্থানের বিষয় কথা-প্রসঙ্গে যাহা বলিয়াছেন, সুরেশ বাবুর ‘দাদার কথা হইতে সেই কথা কয়টি নিম্নে উদ্ধত করিতেছি। ইহা হইতেই গুরুদাস বাবুর মহড়ুদার হৃদয়ের পরিচয় পাওয়া যাইবে :– ‘হোষ্টেলের আর একটি লোকের কথা বলি শোন— এখন তাহার অনেক পয়সা হয়েছে, কলকাতায় বাড়ী করেছেন, র্তার বইয়ের দোকান আছে, নাম গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়। বোধ হয় নাম শুনেছ ? এমন সং, ন্যায়নিষ্ঠ, কৰ্ত্তব্যপরায়ণ লোক বাঙ্গালীর মধ্যে দেখিছি বলে মনে হয় না । বিশেষতঃ তার তখন কার অবস্থার মত লোকের মধ্যে । তিনি আমাদের হোষ্টেলের বাজার সরকার ছিলেন । সামান্তই বেতন পেতেন । বোধ হয় সংসারে অনেক লোকজন প্রতিপালন করতে হতো, জীবনী-কোষ صo 8 খুবই টানাটানি ছিল বুঝতাম। এদিকে হোষ্টেলের বাজার সরকারের কাজে তিনি অনেক পয়স ঘাটাঘাটি করতেন। ইচ্ছা করলে যথেষ্ট সরাতে পারতেন । কিন্তু তার পরম শত্রুও কখন বলতে পারে নাই—“গুরুদাসবাবু একট পয়সা চুরি করেছেন ? আমার দৃঢ় বিশ্বাস-বাজার সরকারের এ সুখ্যাতি পৃথিবীতে কেউ করতে সাহস পাবে না ।” ‘তিনি মেডিকেল কলেজের ছেলেদের জন্ত দু’টা আলমারিতে সামান্ত ডাক্তরি বইও রাখতেন। ছেলের বই কিন্‌বার সময় বইয়ের দাম জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বলতেন—‘এটা এত টাকা, ওট। অত টীক। কেনা পড়েছে ।” ছেলেরা কত দিতে হবে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলতেন—যা হোক্‌ দাও ” “যা হোকু দাও । আমি একদিন তাকে বললাম—“গুরুদাস বাবু’ বেশ ব্যবসা করছেন ? বইটার কেন দামের উপর যদি বলেন— ‘যা হোক দাও, যা হোক দাও ! তবে ছেলেরা কে আর আপনাকে টাকাটা সিকিট দিতে চাবে ? কুচার পয়সা দিয়ে সেরে দেবে। তাতে তিনি হেসে বলতেন—তাই ঢের, তাই ঢের । তোমাদের কাছে আবার কি নেব ? অথচ দেখ, তার তখন কত টানাটানি ছিল ! একটা কথা আছে, ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট’ , কিন্তু গুরুদাসবাবু সম্বন্ধে