পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পদ্মিনী বিমোহিত হইলেন । অতঃপর সম্মান প্রদর্শনার্থ ভীম- সিংহ যবনরাজের সহিত দুর্গের বহি র্দেশ পর্য্যন্ত গমন করিলে, শত্রুগণ র্তাহীকে বন্দী করিল। তখন আলা মহা হৃষ্ট হইয়া ব্যক্ত করি লেন যে, পদ্মিনীকে প্রাপ্ত না হইলে তিনি ভীমসিংহকে মুক্ত করিবেন না । এই দুর্ঘটনায় চিতোর ম্ৰিয়মাণ হইল । কিন্তু রাজপুত বীর বা রাজপুতরমণী বিপদাপদে কখনও অভিভূত হন নাই। পদ্মিনী,পিতৃব্য গোরা এবং ভ্রাতুপুত্র বাদলের সহিত পরামর্শ করিয়া কৰ্ত্তব্য স্থির করিলেন । আলার নিকট সংবাদ প্রেরিত হইল যে, পদ্মিনী স্বামীর মুক্তির জন্য আত্মদানে প্রস্তুত হইয়াছেন । তিনি যবনরাজশিবিরে পরিচারিকবর্গ সহিত উপস্থিত হইবেন । নির্দিষ্ট দিবসে সাত শত শিবিক দুর্গ হইতে বহির্গত হইল । একবার শেষ সাক্ষাতের ছলে শিবিক ভীমসিংহের শিবিরে উপস্তিত হইলে তন্মধ্য হইতে জনৈক রাজপুত যোদ্ধা অবতরণ করিলে, ভীম তাহাতে আরোহণ করিলেন। পরে সে শিবিকা চিতোর দুর্গাভিমুখে ধাবিত হইল। সাক্ষাতে বহু বিলম্ব হইতে দেখিয়া,আল সন্দিহান চিত্তে তথায় [ ১৫০ j পদ্মিনী উপস্থিত হইলেন। রাজপুতবীরগণ ছদ্মবেশ পরিত্যাগ পূর্বক শক্ৰ আক্রমণ করিলেন। ভীমসিংহ নিৰ্ব্বিঘ্নে দুর্গে উপস্থিত হইলেন। বিপক্ষ দমনে অথবা পদ্মিনী লাভে বিফল প্রযত্ন হইয়া ভগ্নমনোরথে আল দীনচিত্তে দিল্লী প্রত্যাগমন করিলেন । বহুসৈন্ত সহ আলাউদ্দিন পুনরায় চিতোর আক্রমণ করিলেন । রাজপুতবীরগণ প্রাণপণে যুদ্ধ করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। কিন্তু যবন সেনার আধিক্য বশতঃ দিন দিন ক্ষীণবল হইতে লাগিলেন । অবশেষে অনন্তোপায় হইয়া রাজপুতদিগের শেষ উপায় অবলম্বন করা স্থির হইল। রাজপুত রমণীগণ যবনম্পর্শ অপেক্ষা অগ্নিস্পর্শ সুখকর মনে করিয়া “জহর” উযাপনে কৃতসঙ্কল্প হইলেন। যবনের হাত হইতে মুক্ত হইবাব জন্য চিতোরবাসিনী মহিলাগণ অতি সন্তুষ্টচিত্তে জলন্ত চিতায় ভস্মীভূত হইতে উৎসাহিত হইলেন। পদ্মিনীপ্রমুখ রমণী বৃন্দ সংসারের মায়া ছিন্ন করিয়া, আনন্দ সহকারে পিতা, মাতা, স্বামী, পুত্রদিগের নিকট এজন্মের মত বিদায় গ্রহণ পূৰ্ব্বক অত্যুৎকৃষ্ট ভূষণে ভূষিত হইয়া মাঙ্গল্য গীতি গান করিতে করিতে চিতাভিমুখে গমন করিতে লাগিলেন । জ্বলম্ভ