পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোপা ও ধৰ্ম্মশীলা রমণী ছিলেন । কথিত আছে যে অবগুণ্ঠন সম্বন্ধে ইনি নিম্নলিখিত মত প্রকাশ করেন— “ধাৰ্ম্মিক ব্যক্তি যে অবস্থায় থাকেন তাহাতেই শোভা পান। গুণবান ব্যক্তি কুশের বস্ত্রই পরিধান করুন, শতছিদ্র জীর্ণ বাসেই আচ্ছাদিত হউন অথবা কৃষ্ণ কায়ই হউন, তিনি আপনার তেজে আপনি শোভা পান। ধৰ্ম্মই মনুষ্যের আবরণ, ধৰ্ম্মই মনুষ্যের সৌন্দর্য্য। নানা অলঙ্কার ভূষিত বালকও যদি পাপানুসারী হয় তবে আর তাহার লাবণ্য থাকে না । হৃদয় যাহার পাপের আগার, বাহ্যিক • আবরণ তাহার কি করিবে ? সে অমৃতমুখ বিষকুম্ভ । শারীরিক দোষ যাহার সংযত, বাক্য যাহার নিয়মিত, ইন্দ্রিয় সকল যাহার বশীভূত, চিত্তবৃত্তি যাহার নিরুদ্ধ, ও মন যাহার প্রসন্ন, তাহার অবগুণ্ঠনে বদন ঢাকিবার প্রয়োজন কি ? যাহাদিগের লজ্জা নাই, সন্ত্রম নাই, যাহাদিগের চিত্ত বশীভূত হয় নাই, ইন্দ্রিয় সকল দুৰ্দ্দমনীয়, শত অবগুণ্ঠনে আবৃত হইলেই বা তাহাদের রক্ষা কোথায় ? যাহার চিত্ত আত্মবশ, পতি যাহার প্রাণ, সে নারী চন্দ্র সূর্য্যের স্থায় সৰ্ব্বজন সমীপে প্রকাশিত হইলেই বা হানি কি ? যে আপনাকে আপনি রক্ষা করে সে [ १० J গোপ সুরক্ষিতা নতুবা অবগুণ্ঠনবতী হইয়া গৃহ মধ্যে রুদ্ধা থাকিলেও স্ত্রীগণ অরক্ষিত।” (ললিতবিস্তীর-১২অ) কয়েক বৎসর গোপা সিদ্ধার্থের সহিত সুখে বাস করিতে লাগিলেন। অতঃপর ইহার একটা সন্তান জন্ম গ্রহণ করিল। প্রসবের সপ্তদিবসের রাত্রিতে পতি ধৰ্ম্মার্থ গৃহ ত্যাগ করিলে, গোপ শোকাভিভূত হইয়া অতি কষ্ট্রে দিনযাপন করিতে লাগিলেন। এইরূপে পতির আদর্শনে সপ্ত বৎসর অতীত হইল । সাতবৎসর পরে সিদ্ধার্থ ( তখন বুদ্ধদেব ) কপিলবস্তু দর্শনে গমন করিয়া, প্রাতঃকালে নগরে ভিক্ষার্থ বহির্গত হইলেন। রাজপুত্রের ভিক্ষুকের বেশ দর্শনে নাগরিক লোকের শোককোলাহল উখিত হইল । তচ্ছ বণে গোপী প্রাসাদের উপর উঠিয়া স্বামীকে দর্শন করিলেন। দেখিলেন অনাবৃত পদে, মুণ্ডিত মস্তকে, পীত পরিচ্ছদে, ভিক্ষাপাত্র হস্তে, অবনত মস্তকে বুদ্ধদেব ধীর পাদক্ষেপে ভিক্ষার্থ অগ্রসর হইতেছেন। এ সকল দেখিয়া ধাৰ্ম্মিক গোপা অতি কষ্টে আত্ম সংযম পূৰ্ব্বক শ্বশুরকে স্বামীর আগমনবার্তা প্রেরণ করেন। কয়েকদিন পরে বুদ্ধ রাজবাটীতে আহারার্থ আগমন করিলে, গোপা পুত্র রাহুতকে বলিলেন, “বৎস