পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নিয়ে নিজেদের হাতে ধরে থাকবে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরম্ভ হল। ইকুলে টিফিনের ছুটির সময় বা বাসের ক্ষেপের প্রতীক্ষায় যখন বসে থাকতে হত—তখন “সরলা দিদি”কে নিয়ে দুটি খেলা করা বা তাঁকে ঘিরে ইংরেজী রূপকথা শোনা—এই হল তাদের কাজ। মাঝে মাঝে “সরলা দিদিকে” বাড়িতে নিমন্ত্রণ করা ও প্রত্যেকের যেটি সবচেয়ে প্রিয় ও রুচিকর জিনিস সেইটি তাঁকে খাওয়ান।

 সেই ঘুঁটি খেলার একটি বুলি এখনও মনে পড়ে—কি জানি আজকালকার মেয়েরা আর সেই বুলি বলে সেইরকম ঘুঁটি খেলে কিনা।

“ও দোলন দোলন ও দোলনটি
এক তুলব দোলের নোটনটি
নোটনধাম নোটনধাম নোটনধামটি।”

 আজকাল মেয়েদের মধ্যেও indoor games বলতে “লুডো” “ক্যারাম” এইসব বোঝায়। এই বিজাতীয়দের মধ্যে স্বজাতীয় ঘুঁটিকে ঢোকালে কেমন হয়?

 কথামালার ক্লাস থেকে আমি প্রায় সাত বছরে ঢুকেছি, আর সতের বছরে বি-এ পাস করে বেরিয়েছি এই বিদ্যালয় থেকে। এর মধ্যে কত সঙ্গিনী, কত প্রণয়িনী, কত স্থায়ী বান্ধবী লাভ করেছি। পাস করে বেরোনর পরও বছর বছর প্রাইজের পূর্বে আমার ডাক পড়ত—মেয়েদের এ উপলক্ষে গান ও অভিনয়াদি শিখিতে সাজিয়ে গুজিয়ে তৈরি করার জন্যে। শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীদেরও আমি খুব প্রিয় ছিলুম। যখন বি-এ পাস করলুম সব শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীরা মিলে আমায় অভিনন্দন করে এক সেট ভাল ইংরেজ কবিদের গ্রন্থাবলী উপহার দিলেন।

পাল্কীবাহন

অনেক এগিয়ে এসে পড়েছি। আবার পিছিয়ে বলি। যোড়াসাঁকোয় থাকতে ইস্কুল যেতুম পাল্কীতে চড়ে। ইস্কুলের রাস্তা ছিল যোড়াসাঁকো থেকে চিৎপুর রোডে বেরিয়ে বারাণসী ঘোষ স্ট্রীট দিয়ে মাণিকতলা স্ট্রীটে পড়া। মাণিকতলা স্ট্রীটের ছোট রাস্তার উপর একটা দোকান ছিল, সেখানে বেহারাদের কাঁধে পাল্কী থামিয়ে “gem” বিস্কুট ও লজঞ্জুস কেনা অমাদের জীবনে প্রথম shopping রসের অনুভূতি।

 সেকালে পাল্কীর সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত সংযোগ ছিল। দুচারখানা

২৩