পাতা:জ্ঞানযোগ - চতুর্থ সংস্করণ.pdf/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্ঞানযোগ । উহারই ক্রমসঙ্কোচস্বরূপ । সুতরাং আমরা আবার ঘুরিয়া ক্রমবিকাশ প্রক্রিয়ানুসারে সেই বিশ্বব্যাপী চৈতন্যে ফিরিয়া যাইব—ঐ বিশ্বব্যাপী চৈতন্যই ঈশ্বর। সেই বিশ্বব্যাপী চৈতন্যকেই লোকে প্রভূ, ভগবান, খ্ৰীষ্ট, বুদ্ধ বা ব্ৰহ্ম বলিয়া থাকে—জড়বাদীরা উহাকেই শক্তিরূপে উপলব্ধি করে, এবং অজ্ঞেয়বাদীরা উহাকেই সেই অনন্ত অনিৰ্ব্বচনীয় সৰ্ব্বাতীত পদার্থ বলিয়া ধারণা করে। উহাই সেই বিশ্বব্যাপী প্রাণ-উহাই বিশ্বব্যাপী চৈতন্য-উহাষ্ট বিশ্বব্যাপিনী শক্তি, এবং আমরা সকলেই উহার অংশস্বরূপ। কিন্তু আত্মার অমরত্ব প্রমাণে ইহাও পৰ্য্যাপ্ত হইল না। এখনও অনেক সংশয়, অনেক আশঙ্ক রহিয়া গেল। কোন শক্তির নাশ নাই, একথা শুনিতে খুব মিষ্ট বটে, কিন্তু বাস্তবিক আমরা যত শক্তি দেখিতে পাই, সবই মিশ্রণোৎপন্ন, যত রূপ দেখিতে পাই, তাহাও মিশ্রণোৎপন্ন। যদি তুমি শক্তিসম্বন্ধে বিজ্ঞানের মত ধরিয়া উহাকে কতকগুলি শক্তির সমষ্টি মাত্র বল, তবে তোমার আমিত্ব থাকে কোথায় ? ঘাহা কিছু মিশ্রণে উৎপন্ন, তাহাই শীঘ্র বা বিলম্বে উহাদের কারণীভূত পদার্থে লয় হইবে। যাহা কিছু কতকগুলি কারণের সমবায়ে উৎপন্ন, তাহারই মৃত্যু, তাহারই বিনাশ অবশ্যম্ভাবী। শীঘ্র বা বিলম্বে উহা বিশ্লিষ্ট হইবে, ভগ্ন হইবে, উহাদের কারণীভূত পদার্থে পরিণত হইবে। স্বাত্মা কোন ভৌতিক শক্তি বা চিন্তাশক্তি নহে। উহা চিন্তাশক্তির অষ্ট, কিন্তু উহা চিন্তাশক্তি নহে। উহা শরীরের গঠনকর্তা, কিন্তু উহা শরীর নহে। কেন ? শরীর কথন আত্মা হইতে পারে না, কারণ, উহা চৈতন্যবান নহে। মৃতব্যক্তি অথবা ~ ૨.૨૨