পাতা:জ্ঞানযোগ - চতুর্থ সংস্করণ.pdf/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আত্মার মুক্তস্বভাব। আধুনিক দর্শনেও এই বিচার প্রবেশ করিয়াছে, দেখিতে পাওয়া যাইবে । দুই দল আছেন, এক দল বলিতেছেন, আত্মা বলিয়া কিছু নাই, উহা ভ্রান্তি মাত্র। এই ভ্রাস্তির কারণ জড়কণা সকলের পুনঃ পুনঃ স্থান-পরিবর্তন ; এই সমবায়—যাহাকে তোমরা শরীর মস্তিষ্ক প্রভৃতি নামে অভিহিত করিতেছ, তাহারই স্পন্দন, তাহারই গতিবিশেষ এবং উহার মধ্যস্থ অংশ সকলের ক্রমাগত স্থান-পরিবর্তনে এই মুক্তস্বভাবের ধারণা আসিতেছে। কতকগুলি বৌদ্ধ সম্প্রদায় ছিলেন, তাহারা বলিতেন, একটা মশাল লষ্টয়া চতুর্দিকে ক্রমাগত শীঘ্র শীঘ্ৰ যুৱাইতে থাকিলে একটা আলোকের বৃত্ত দেখা যাইবে। বাস্তবিক এই আলোকবৃত্তের কোন অস্তিত্ব নাই, কারণ, ঐ মশাল প্রতি মুহূর্তে স্থান পরিবর্তন করিতেছে। তদ্রুপ আমরাও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরমাণুসমষ্টি-মাত্র, উহাদের প্রবল ঘূর্ণনে এই ‘অহং ভ্রাস্তি জন্মিতেছে। অতএব একটা মত হইল এই যে, এই শরীরই সত্য, আত্মার অস্তিত্ব নাই। অপর মত এই যে, চিন্তাশক্তির দ্রুত স্পন্দনে জড়রূপ এক ভ্রান্তির উৎপত্তি, বাস্তবিক জড়ের অস্তিত্ব নাই। এই তর্ক আধুনিক কাল পর্যন্ত চলিতেছে—এক দল বলিতেছেন-আত্মা ভ্রম মাত্র, অপরে আবার জড়কে ভ্রম বলিতেছেন। তোমরা কোন মত লইবে ? অবগু আমরা আত্মাস্তিত্ববাদ গ্রহণ করিয়া জড়কে ভ্ৰমাত্মক বলিব। যুক্তি দুদিকেই সমান, কেবল আত্মার নিরপেক্ষ অস্তিত্বের দিকে যুক্তি অপেক্ষাকৃত প্রবল, কারণ, জড় কি, তাঙ্গ কেহ কথন দেখে নাই। আমরা কেবল আপনাদিগকেই অনুভব করিতে পারি। আমি এমন লোক দেখি মাই, যিনি আপনার বাহিরে ৩২৭